“হবি” শব্দটির বাংলা প্রতিশব্দ “শখ” – এটা মানতে আমার একটু অসুবিধে হয় । অথচ এর থেকে কাছাকাছি কোন শব্দও তো পাচ্ছিনা। কেন অসুবিধে হয় একটু বলি।
“শখ” করে একদিন সিনেমা দেখে আসা যায়, কিন্তু তাহলে কি সিনেমা দেখাকেই সে “হবি” বলতে পারে?
হবির মধ্যে নিজে একটা কাজ করার ইঙ্গিত আছে- অন্তত নিবিষ্টতার, নিমগ্নতার সান্নিধ্য আছে। শখের মধ্যে কাজের দায় কম – বরং উপভোগ করাই যেন মুখ্য। “শখ” অনেকটাই করলে করলাম, না করলে কি – এই গোছের কিছু বলে মনে হয়। হবির মধ্যে কিন্তু বারবার একই কাজে ফিরে আসার আকাঙ্ক্ষা আছে। মনে আনন্দ থাকলে তবেই শখের কিছু করতে ইচ্ছে করে, কিন্তু হবির কাছে ফিরতে গেলে মনে কষ্ট রেখেও যাওয়া যায়। আমার তো ভাবতে অসুবিধে হয় না যে সারা দিনের ক্লান্তি নিয়েও একটি মানুষ নিজের ঘরের এককোণে বসে নিজের খাতায় কিছু লিখছে। লেখা তার “শখ” বলে নয়, সে লিখে হাল্কা হতে পারে বলে লিখছে। লিখতে ভালবাসে বলে লিখছে।
ভালবাসা আর শৌখিনতার মধ্যে যে দূরত্ব “হবি” আর “শখ”-এর মধ্যেও তাই।
প্রথম চাকরির interview দিতে যাওয়ার আগে যখন “জীবনপঞ্জী” অর্থাৎ “resumè” লিখতে বসলাম, সেই প্রথমবার ভাবলাম আমার হবি কি। এর আগে না কোন প্রয়োজন পড়েছিল, না কারো জানার ইচ্ছে ছিল আমার হবি কি! আমারও বলার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে ছিল না। আসলে হবি ব্যাপারটাই বেশ ব্যক্তিগত ছিল। প্রেমে পড়ার প্রথম দিনে প্রেয়সীর কাছে গুঢ় খবর জানার মত ভঙ্গী করে জিজ্ঞেস করতে হত – তোমার হবি কি! বাইরের খোলস ছাড়িয়ে ভিতরের মানুষটিকে জানতে হলে ওই প্রশ্নটিই ছিল প্রথম ধাপ।
এবারের ক্যানভাসে তাই আমরা হবি সম্পর্কে লেখা চেয়েছিলাম। সে আবদার অনেকেই মিটিয়েছেন। ভালো ভালো লেখা, ছবি জমা পড়েছে। আশা করি সকলের পড়তে ভালোই লাগবে।
মৃন্ময় এবং অভিযানের প্রতি অগাধ ভালবাসা জানাই। ওদের ছাড়া এই পত্রিকা কোনদিনই সম্ভব হত না, একথা বারে বারেই বলি।
পত্রিকাটিকে আপনাদের স্নেহ দেবেন এই আশা করি। আপনাদের পাশে পেলে আরও অনেকটা পথ একসাথে হাঁটতে পারব আমরা সবাই – আরও কাছাকাছি আসতে পারব।
ভালবাসা নেবেন।
Perfect editorial writing!