সুদেষ্ণা বসু
আমরা যারা নব্বই দশকের ছেলেমেয়ে তাদের কাছে পূজোর আনন্দ এখনকার প্রজন্মের থেকে অনেক আলাদা আর বেশ মজাদার ছিল । পাড়ায় পাড়ায় ঠাকুর দেখা , আড্ডা দেওয়া , যত সামান্য পকেট মানি দিয়ে খাওয়া দাওয়া আর পাড়ার পূজোতে ফাংশানে অংশ গ্রহণ।
উমার বাপের বাড়িতে থাকাকালীন আমাদের আনন্দ এক রকম । কিন্তু মা কৈলাসে চলে যাওয়ার পর যে আনন্দের রেশ রেখে যান আজ তার কথাই বলব ।
সেসব দিনে বিজয় দশমী মানেই ঘরে ঘরে ভুড়িভোজের আয়োজন হতো । দশমীর দিন বাড়িতে প্রচুর আত্মীয় স্বজনের আনাগোনা হতো । বিজয়ার প্রণাম আর শুভেচ্ছা বিনিময় দিয়ে শুরু হতো মিষ্টিমুখ পর্ব ।
সব বাড়িতে তখন অতিথি আপ্যায়ণের জন্য নারকেল নাড়ু নারকেল সন্দেশ কুচো নিমকি কাঠি গজা বা মিষ্টি নিমকি মজুত থাকত । আর থাকত অবশ্যই মটরের ঘুগনি ।
![](https://i0.wp.com/95canvas.com/wp-content/uploads/2023/10/WhatsApp-Image-2023-10-04-at-22.27.51.jpeg?resize=1000%2C562&ssl=1)
বিজয়ার মিষ্টিমুখ পর্ব যে কতদিন চলত তার ঠিক নেই । পুরো পাড়া প্রতিবেশীর বাড়ি গিয়ে না খাওয়া পর্যন্ত আমাদের বিজয়ার পর্ব বহাল থাকত ।
যদি কোনো কারণে কারোর বাড়ি যাওয়া হল না , তবে পরে কোনও সময় গিয়ে ঢিপ করে প্রণাম করলেই পাওয়া যেত এক ডিস ভর্তি ঘরে বানানো নানা ধরনের মিষ্টি । তাই পূজোর পরেও পূজোর আমেজ থেকেই যেত ।
এমন ঘটনাও ঘটেছে যখন বাড়ি গিয়ে মিষ্টি খেয়ে পেট ভরে গেলে , বাকি মিষ্টিগুলো কাগজে মুড়ে বাড়ি নিয়ে আসা হতো ।
চেনা জানা বাড়িতে বিজয়া পর্ব সারা হলেও বন্ধুর সাথে জুটি বেঁধে অচেনা বাড়িতে ঢুকে অনায়াসে মিষ্টি মুখ করার চলও ছিল । পূজোর আনন্দ একরকম আর পূজো শেষ হয়েও মিষ্টি নোনতা খেয়ে পেট পূজোর আনন্দ আর এক রকম।
মিষ্টিমুখ আর জমিয়ে খাওয়া
এটা হল বিজয়ার সুখ …..
উমা কৈলাসে চলে গেলেও
ছোটবেলার পূজোর এটা অন্যসুখ
Facebook Comments