Site Overlay

শ্যেন

অঞ্জনা চোখে গাঢ় করে কাজল দিলো।একবার।দু বার।তিন বার।উঁহু ঠিক হচ্ছে না।একটু smudge করলো।এইবার খানিকটা হয়েছে।আজ মুডটা চটকে আছে।সে বরাবর জয়ন্তকে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে এসেছে।জয়ন্ত তার জেরায় বহুবার কবুলও করেছে যে সে আর চন্দ্রার সাথে যুক্ত নয়।তাও কেন জানি না অঞ্জনার মন মানতো না।মেয়েদের একটা ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় কাজ করে যা ছেলেরা বুঝতে পারে না।জয়ন্ত তার জীবনে পাঁচ বছর।এর আগে সে জয়ন্ত ও চন্দ্রার সম্পর্ক জানতো।বারো বছরের দীর্ঘ সম্পর্ক ছিল তাদের। অঞ্জনা সব জানে।কিন্তু বর্তমানেও জয়ন্ত যে এখনো যোগাযোগ রেখে চলেছে সেটা সে সেদিন জানলো।

এখন প্রযুক্তি এতো উন্নত যে মানুষের লুকোনোর জায়গা নেই। এতে যেমন সন্দেহ বেড়েছে মানুষের তেমন অনেক চুরিও ধরা পড়ছে ! চুরিই তো। জয়ন্ত তার কাছে লুকিয়ে কেন যাবে চন্দ্রার কাছে ? কেন ??

অঞ্জনা প্রায়ই দেখতো জয়ন্ত অন্য কোথাও ব্যস্ত,ফোনে।সে সাদা মনে ভাবতো হয়তো কাজে ব্যস্ত জয়ন্ত।কিন্তু সন্দেহটা আরো দানা বাঁধলো যখন সে চন্দ্রাকেও এক ই সময় ব্যস্ত দেখতো ফোনে !

মানুষ এরকম হয় ? মানুষ এরকমই হয় !!

অঞ্জনা GPS track করে একদিন ওদের দুজনকে দেখেই ফেললো একসাথে শপিং মলের ফুড কোর্টে !! হৃদয় ভাঙার কোনো আওয়াজ শোনা যায় না কিন্তু সেইটাই সব থেকে মর্মান্তিক ! এই অঞ্জনাই স্নেহ দিয়ে, মমতা দিয়ে জয়ন্তকে আগলে রাখতো। আর জয়ন্ত এটা কি করলো তার সাথে ??!!

অঞ্জনার দুটো চোখ যেন পুড়ে গেলো দূর থেকে ওদের দুজনকে একসাথে হাসতে দেখে !! কিন্তু অঞ্জনা কাঁদেনি।একটুও না। বাজপাখির মতো একদৃষ্টে তাকিয়ে তাকিয়ে সেই দৃশ্য সে সহ্য করেছে। অধিক শোকে মানুষ এরকমই হয়ে যায় সম্ভবত !

আজ অঞ্জনা বায়না ধরেই জয়ন্তকে আসতে বলেছে চায়না টাউনে।জয়ন্ত একটু অবাক ই হয়েছে কারণ অঞ্জনা সচরাচর এসব জায়গায় যেতে চায় না।তাও ঠিক আছে। কি মন হয়েছে ! জয়ন্ত ঠিক সাতটায় পৌঁছে যাবে, আর অঞ্জনাও আসবে এরকম কথাই ঠিক হলো।

অঞ্জনা কালো dress up করলো।কালো মানেই খারাপ তো নয় ! কালো তো সব শুষে নেয়।black is strong ! আজ সে জয়ন্তকে জানিয়ে দেবে আর লুকোচুরির প্রয়োজন নেই। যে জয়ন্ত তার প্রাণ, আজ তাকে বিসর্জন দেবে অঞ্জনা !অঞ্জনা তৈরী হয়ে বেরোনোর আগে ছোট্ট ধারালো ছুরিটাও সঙ্গে নিলো...

কখনো কখনো পরীরাও ডাইনি হয়ে যায় ! অপ্রত্যাশিত আঘাতে !!

Facebook Comments