Site Overlay

পীযূষ ভট্টাচার্য-র লেখালেখির সাথে জড়িয়ে পড়ার মুহূর্তগুলি

সোমনাথ দাশগুপ্ত

 [এই লেখাটা পুরোপুরি খুব চট করে পড়ে ফেলা যাবে না। ‘যাবে না’ মানে, এখানে যেটুকু লিখলাম সেটুকু হয়তো যাবে, কিন্তু ‘পুরোপুরি’ বলতে বোঝাতে চাইছি, এটা গত দেড়-দু মাস সময়পর্বের একটা জার্নি। পুরোপুরি সেই জার্নিটাকে ধরতে চাইলে, এ লেখার পাঠকের একটু সময় লাগবে। আর যেহেতু এই জার্নিটা এখনো চলছে, তাই এই লেখা মূলত একটা পথের সামনে এনে দেওয়া পাঠককে। রাজপথ বা গলিপথ নয়, নইলে তো ‘রাস্তা’ বা ‘গলি’ই লিখতাম, খুব অল্প মানুষের যাতায়াতের ফলে ঘাস মাঠের মধ্যে দিয়ে যেমন পায়ে চলা পথের আভাস থাকে তেমনই। যদি এ পথে হাঁটা মনস্থ করেন, পাঠক, এ লেখা তাঁকে হয়তো দেখিয়ে দেবে পাশেই কেমন একটা ঘেঁটুফুলের ঝোপ, এই যে একটা কামিনী ফুলের গাছ, ওই যে একটা ছোট্ট নদী, ওখানে বুঝি একটা ঝর্না বা আরেকটু এগিয়ে বুঝি দেখতে পাওয়া যাবে একটা উঁচু টিলা, পিছনে কি পাহাড়ও আছে একটা? পাশ দিয়ে একেবেঁকে চলে গেছে পথ? তবে তো পাঠকের আরো খানিকটা সময় লাগবে গন্তব্যে পৌঁছতে, ততটা এ লেখা যাবে না। সেটা পাঠকের ব্যক্তিগত জার্নির পথ। পায়ে চলা এ-পথে আরো কিছু মানুষ যদি হাঁটা মনস্থ করেন, চলতে শুরু করেন, এ লেখার সার্থকতা সেখানেই, সেটুকুই।]

বাংলা ভাষায় গল্প-প্রবন্ধ পড়ার সময় মাথায় থাকে, জনপ্রিয় বাণিজ্যিক আলোফোকাসের বাইরেও যে অসামান্য মেধা ও মননের চর্চা প্রতিনিয়ত হয়ে চলেছে তার স্পর্শ থেকে ব্যক্তিগত পাঠাভ্যাস যেন দূরে না সরে যেতে থাকে। কিছু মানুষের মতামত, পাঠপ্রতিক্রিয়াকে এজন্য বাড়তি মূল্য দিয়েই থাকি। এমন একজনের মুখেই প্রথম শুনেছিলাম পীযূষ ভট্টাচার্যের নাম ২০১২-র বইমেলার সময়ে। ভাষাবন্ধন থেকে প্রকাশিত ‘তালপাতার ঠাকুমা’ বইখানার রেকমেন্ডেশন দিয়ে সৈকতদা (চট্টোপাধ্যায়) জানিয়েছিল, “একটা তালগোল পাকানো লেখা ৯৪ পাতার, পড়া শুরু করেছি, পড়তে গিয়ে কিরকম একটা ঘেঁটে আছি। নিতান্ত “ব্যাখ্যাকাংলা” না হলে ট্রাই কোর।” তো, কিনে রাখা গেল।

তালপাতার ঠাকুমা (উপন্যাস)
পৃষ্ঠা : ৯৫,
প্রথম প্রকাশ : কলকাতা বইমেলা, ২০১২,
গ্রন্থস্বত্ব : মাধুরী ভট্টাচার্য,
প্রচ্ছদ : রাজীব চক্রবর্তী,
প্রকাশক : প্রণতি ভট্টাচার্য, ভাষাবন্ধন প্রকাশনী ৩/৫২ বিজয়গড়, কলকাতা ৩২, 
অক্ষরবিন্যাস : ভাষাবন্ধন, 
মুদ্রণ : বর্ণনা, ৬/৭ বিজয়গড়, কলকাতা ৩২,
মূল্য : ৭০ টাকা,
উৎসর্গ : মণীষা ভট্টাচার্য ও প্রদীপ ভট্টাচার্যের প্রতি ।
চারটি শিরোনামায় বিভক্ত :
রক্তপাতহীন দন্ত উৎপাটন (পৃ ৭-৩৪),
বৃষ্টি ফোঁটার কোনো ব্যাসার্ধ নেই (পৃ ৩৭-৫৮),
তীর্থযাত্রা পথে কিছু লিলিপুট (পৃ ৬১-৮০),
পাতালের নদী মোহনায় (পৃ ৮৩-৯৫),
পৃ ৫, ৩৫, ৫৯ ও ৮১ রচনার শিরোনামাঙ্কিত শূন্য পৃষ্ঠা, পৃ ৬, ৩৬, ৬০ ও ৮২ শূন্য পৃষ্ঠা ।

নামটা চেনা হল, তাই পরের বছর ‘ভাষাবন্ধন’ থেকেই “সূর্য যখন মেষ রাশিতে” বইটাও কিনে ফেলা গেল।

সূর্য যখন মেষ রাশিতে (উপন্যাস)
পৃষ্ঠা : ১১২, 
প্রথম প্রকাশ : জানুয়ারি, ২০১৩, 
গ্রন্থস্বত্ব : মাধুরী ভট্টাচার্য, 
প্রচ্ছদ : রাজীব চক্রবর্তী, 
প্রকাশক : প্রণতি ভট্টাচার্য, ভাষাবন্ধন প্রকাশনী ৩/৫২ বিজয়গড়, কলকাতা ৩২, 
মুদ্রণ : বর্ণনা, ৬/৭ বিজয়গড়, কলকাতা ৩২, 
মূল্য : ১০০ টাকা, 
উৎসর্গ : দীপিকা সেন ও অভিজিৎ সেনের প্রতি

আমার নিজের একটা সমস্যা আছে, কোনো অচেনা লেখকের লেখা প্রথম পড়ার আগে একটু প্রস্তুতি লাগে। তাঁর অন্যান্য লেখা, তাঁকে নিয়ে অন্যান্যদের মূল্যায়ন, নিজের লেখা বিষয়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি এসব মিলিয়েই পড়ার অভ্যাস। এই করেই জমে যায় বই, লেখা, লেখক – পড়া শুরু করার আগের প্রস্তুতির অপেক্ষায়। পীযূষ ভট্টাচার্য ও জমেই গেলেন। খুব একটা চোখেও পড়ে না তাঁর বই, পুরনো কিংবা নতুন। ক্বচিৎ চোখে পড়ল তো বইমেলার কম ডিসকাউন্টে কিনব না, কলেজ স্ট্রীট থেকে কিনব বলে উইশলিস্টে ঢুকে যায় বই। চর্চাপদের “কৃষ্ণবর্ণ ষাড়ের পিঠে” ও সেই ভাবেই ঢুকে রইল। এদিকে কলেজস্ট্রীটও যাওয়া হয়না সারা বছর। যেদিন গেলাম, উইশলিস্ট নিয়ে যেতে ভুলে গেলাম। এভাবেই চলছিল। হঠাৎ গত ২০১৯-এর শেষে পল্টুদার কাঙাল হরিনাথ লিটিল ম্যাগাজিন লাইব্রেরিতে, হ্যাঁ বারাসতেই এটা, অন্য কাজে গিয়ে চোখে পড়ল ‘গল্পবিশ্ব’ পত্রিকার ২০০৭ এর আগস্ট সংখ্যায় একটা ক্রোড়পত্র করা হয়েছে পীযূষ ভট্টাচার্যকে নিয়ে। জানলাম প্রকাশিত বইগুলির ডিটেলস, জানা গেল গল্পগুলো সম্বন্ধেও। সাক্ষাৎকার পড়া হল। উৎসাহ বাড়ল। এবার বাকি বইপত্র যোগাড় করে পড়া শুরু করে ফেলতে হবে।

গল্পবিশ্ব,
সম্পাদনা: অলোক গোস্বামী (শিলিগুড়ি), ৫ সংখ্যা, অগস্ট ২০০৭‌ শ্রাবণ ১৪১৪ – ক্রোড়পত্র: পীযূষ ভট্টাচার্য
স্বজনেষু (সম্পাদকীয়)
একনজরে পীযূষ ভট্টাচার্য
প্রকাশিত বইয়ের তালিকা
দেবেশ রায় – অনুপস্থিতির শিল্প
সুধীর চক্রবর্তী – দৃশ্যমান অন্তরাল
সাধন চট্টোপাধ্যায় – ঠাকুমার তালপাখা ও একটি নিবিড় পাঠ
অজিতেশ ভট্টাচার্য – কাছের কথাকার
ড. বিজিত ঘোষ – পীযূষ ভট্টাচার্যের মনোগ্রাহী, হৃদয়স্পর্শী দশটি গল্প
রমাপ্রসাদ নাগ – সংকট ও সংকটমোচনের আখ্যান : প্রসঙ্গ পীযূষ ভট্টাচার্য
দিলীপ কুমার বসু ও অমিতাভ গুপ্ত – বাংলা ছোটগল্প : একটি প্রস্তাব
রাজীব চৌধুরী – স্বপ্নের অন্ধকার ও একটি যাদুর তালপাখা
সন্দীপ মুখোপাধ্যায় – পীযূষ ভট্টাচার্য, তাঁর বহুতর বাস্তব [‘এবং মুশায়েরা’ থেকে পুনঃপ্রকাশ]
নিত্যানন্দ ঘোষ – ভিন্ন ধারার কথক পীযূষ ভট্টাচার্য
তাপস রায় – মুক্তির ভঙ্গিমা ও পীযূষ ভট্টাচার্যের গল্প
অরুণাংশু ভট্টাচার্য – পীযূষ ভট্টচার্যের গল্প : কাব্যিক সম্মোহন
অভিজিৎ করগুপ্ত – কীর্তিমুখ
শবর রায় : কীর্তিমুখ (নাট্যরূপ)
কথাবার্তায় পীযূষ ভট্টাচার্য

২০২০র শুরুটা নতুন প্রোজেক্টের চাপে একেবারেই জেরবার ছিলাম, নতুন আপদ শুরু হল লকডাউনের গৃহবন্দী দিন আর অসামাজিক একাকীত্বের পাঁচালি। এর মধ্যেই ‘গুরুচন্ডা৯’ সাইট তাদের কাজকর্মের পরিধি বাড়াতে শুরু করল। বিভিন্ন লেখকদের সাক্ষাৎকার নেওয়ার পরিকল্পনা। ‘গুরুচন্ডা৯’-র সাথে ২০০৪ থেকে সম্পর্ক। প্রথম প্রবাসী হয়ে যখন দেড় বছর আংক্লেশ্বর আর তারপর দেড় বছর বরোদা কাটাতে হয়েছিল চাকরিসূত্রে, তখন থেকেই বাংলা লেখা, পড়া, আড্ডা মারা, তর্ক করার অবলম্বন ছিল একমাত্র বাংলালাইভ আর গুরুচন্ডা৯। ভার্চুয়াল আড্ডা দিতে দিতেই বন্ধুত্ব আর খুব কাছের হয়ে যাওয়া মানুষজন, গ্লোব ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে যাদের অবস্থানচিহ্ন খুঁজে নিতে হয়। প্রায় দশ বছর হল পাকাপাকি ফিরেছি কলকাতায়, দূরত্ব বেড়েছে ভার্চুয়াল বন্ধুদের থেকে, তবু এখনো সাইটের কিছু কাজে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ এলে ফেরাতে মন চায় না। আমার উপর ভার পড়ল দেবর্ষি সারগীর সাক্ষাৎকারের প্রশ্ন সাজানোর। ২০০৮ এ চাকরি বদলে ওমানের মাসকটে চলে যাওয়ার আগে শেষ পড়েছি দেবর্ষি সারগী। তখন পর্যন্ত আপডেট ছিল তাঁর প্রায় সমস্ত লেখার খবরের, কিন্তু এখন তো তবে নতুন করে শুরু করতে হবে আবার। যোগাযোগ করতে গিয়ে দেখলাম সংগ্রহে থাকা ফোন নাম্বারটিও কাজ করছে না। দেবর্ষিবাবু মধ্যমগ্রামে এপিসি কলেজের ইংরিজি ডিপার্টমেন্টের প্রধান পদ থেকে অবসরও নিয়েছেন এতদিনে। উপন্যাস সমগ্র গাঙচিল থেকে একখন্ড আর মিত্র ও ঘোষ থেকে দুখন্ড বেরিয়ে গেছে। খুব বেশি অপঠিত আর থাকছেন না আশা করা যায়, অন্তত বারো বছর আগে যত খুঁজে পেতে পড়তে হয়েছে তাঁর লেখা, এখন ততটা অন্তত নয়। বরং নিজেই দায়িত্ব নিলাম পীযূষবাবুর সাক্ষাৎকারের। এইসূত্রে পড়া হয়ে যাবে তাঁর সব লেখালেখি। বিবলিওগ্রাফি তৈরি করে, ইন্টারভিউ সব পড়ে আনকোরা নতুন সব প্রশ্ন তৈরি করে ফেলা যাবে তাঁকে জিজ্ঞাসা করার। এই সূত্রে যদি আরো বেশি পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায় তাঁর লেখালেখি, পরিশ্রমী পাঠককে প্রাথমিক খোঁজাখুজির চৌকাঠ ডিঙোতে সাহায্য করা যায় একটু, তৃপ্তিই পাব।


পীযূষ ভট্টাচার্যের লেখালেখি সম্পর্কে জানতে প্রথমেই শুরু করলাম তাঁর রচনাপঞ্জি ও চর্চাপঞ্জি তৈরির কাজ, যেভাবে সাধারণত এগিয়ে থাকি। তাঁর সব লেখা আর তাঁকে নিয়ে সমস্ত আলোচনা নথিবদ্ধ করে খুঁজে নিয়ে পড়তে পড়তে এগোনো।

তিনি থাকেন চকভবানী, পুলক নিয়োগী লেন, বালুরঘাট, দক্ষিণ দিনাজপুর। সাহিত্যের ইয়ারবুক এ তাঁর নাম্বার ছিল। ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, মেসেঞ্জারও তিনি দেখেন নিয়মিতই। যোগাযোগ হল।

পীযূষ ভট্টাচার্য

৩ ডিসেম্বর ১৯৪৬ তাঁর জন্ম, বালুরঘাটেই, মামাবাড়িতে। শৈশব কেটেছে : কলকাতার চিৎপুর, অধুনা বাংলাদেশের নীলফামারী এবং দার্জিলিং জেলার সোনাদায়, ১৯৫৮ থেকে আবার বালুরঘাটেই বসবাস। শিক্ষা : প্রাইভেটে বি.এ. পার্ট ওয়ান পর্যন্ত। পেশা :পি.ডব্লিউ.ডি.-তে গ্রুপ ‘ডি’ থেকে শুরু করে করণিক হয়ে ২০০৬এ অবসর। ট্রেড ইউনিয়নের সক্রিয়তার কারণে রাজনৈতিক প্রতিকূলতায় কর্মজীবন কীভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, বছরের পর বছর ইনক্রিমেন্ট হয়নি, পদোন্নতি হয়নি সেসবের মর্মন্তূদ বিবরণী শুনলাম তাঁর মুখেই। বিবাহ : ১৭ এপ্রিল ১৯৭০, স্ত্রী : মাধুরী, সন্তান : দুই মেয়ে, যথাক্রমে পারমিতা ও সঙ্ঘমিত্রা, নাতনি-নাতি : ঐন্দ্রিলা ও ইমন। মেয়েদের বিয়ে হয়েছে মালদায় ও দক্ষিণ কলকাতায়। আমি যখন ফোন করলাম, জানালেন সদ্য করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন স্বামী-স্ত্রী দুজনেই। প্রচন্ড দুর্বল শরীর। তাছাড়া বালুরঘাটের পাট উঠিয়ে কলকাতার ফ্ল্যাটে চলে যাওয়ার ব্যবস্থা সব হয়েই গেছে। লকডাউন ইত্যাদি না হলে এতদিনে শিফটিং হয়েও যেত। জিনিসপত্র প্যাকিং হয়ে রয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে পাকাপাকি চলে যাবেন। বালুরঘাটে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই শুধু থাকেন। বাজার করার জন্য লোক রাখা হয়েছিল সুবিধের হয়নি। কাজের লোক রান্নার লোক না এলে খুবই সমস্যায় পড়ে যান।

তাঁকে জানিয়েছিলাম এর আগে যে ইন্টারভিউগুলি দিয়েছেন তার বিশদ প্রয়োজন, যোগাড় করে পড়ার চেষ্টা করব। তাতে জানা গেল বেশিটাই পাওয়া দুঃসাধ্য, পত্রিকা কপি দুষ্প্রাপ্য। তিনি নিজের সংগ্রহ থেকেই পড়ানোর ব্যবস্থা করবেন, কিন্তু সব বইপত্র, ফাইল, লেখা সংক্রান্ত কাগজপত্র প্যাকিং হয়ে রয়েছে। একা তাঁর পক্ষে সেগুলি আনপ্যাক করা সম্ভব নয়, ট্রান্সপোর্টের লোকেদের ডেকেছেন, তাদের অপেক্ষায় আছেন। আনপ্যাক হলে কিছু পাওয়া যাবে।

ইতিমধ্যে ইন্টারনেট এ মাধবী দাস এর খুব সাম্প্রতিক লেখা পড়লাম পীযূষবাবুকে নিয়ে।

পীযূষ ভট্টাচার্য, এক আলোকিত নাম, বাংলাসাহিত্য ওয়েবজিন, রবিবার, মার্চ ০১, ২০২০

তিনি লিখেছেন একটি প্রকাশিতব্য উপন্যাস ও প্রকাশিতব্য ৫০টি গল্পের কথা। ফোন করলাম তাঁকে কোচবিহারে। জানা গেল ‘তৃতীয় পরিসর’ থেকে ২০২০ জানুয়ারিতে প্রকাশ পেয়েছে আখ্যানসমগ্র-১, তাতে রয়েছে এতাবৎ প্রকাশিত সব কটি উপন্যাসই, অর্থাৎ পাঁচটি – ‘জীবিসঞ্চার’, ‘নিরক্ষরেখার বাইরে’, ‘তালপাতার ঠাকুমা’, ‘সূর্য যখম মেষ রাশিতে’ আর ‘নিরুদ্দেশের উপকথা’। শেষ উপন্যাসটি আগে আলাদাভাবে বই হয়নি কখনো, এই আখ্যানসমগ্রেই প্রথম উপন্যাস আকারে ছাপা হয়। ‘ভাষাবন্ধন’ পত্রিকায় অক্টোবর ২০০৪ এ প্রকাশিত “লুপ্ত পাঠ কিংবা নিরুদ্দেশের উপকথা” ও ‘মধ্যবর্তী’ পত্রিকায় প্রকাশিত “১৩ই আগস্ট” উপন্যাসদুটির গ্রহণ বর্জনের মাধ্যমে এর সৃজন।

আখ্যানসমগ্র – ১ (উপন্যাস সংকলন)
পৃষ্ঠা : ৩২১,
প্রকাশক : শুভ্রজিৎ মোদক, তৃতীয় পরিসর, ১০২ মহর্ষি দেবেন্দ্র রোড, কলকাতা ৭০০০০৬,
www.tritiyoparisar.com, tritiyoparisar@gmail.com, 9836011178, 9051969788,
প্রথম প্রকাশ : জানুয়ারি, ২০২০, 
ISBN : 973-93-80489-54-4, 
গ্রন্থস্বত্ব : লেখক, 
প্রচ্ছদ : দীপ্তনীল রায়, 
মুদ্রক : জয়শ্রী প্রেস, ৯১/১ বি বৈঠকখানা রোড, কলকাতা ৭০০০০৯, 
মূল্য : ৫৫০ টাকা, 
উৎসর্গ : স্বাতী সরকার ও রিপন সরকারের প্রতি,
উপন্যাসক্রম:
জীবিসঞ্চার – ৯
নিরক্ষরেখার বাইরে – ২৭
তালপাতার ঠাকুমা – ৬৭
সূর্য যখম মেষ রাশিতে – ১৫১
নিরুদ্দেশের উপকথা – ২৪১

তৃতীয় পরিসর-এর কর্ণধার সুদীপ্তকে আগে চিনতাম, যখন সে ‘চার্বাক’ পত্রিকা করত আর নবারুণ ভট্টাচার্য সংখ্যা করবে বলে পরিকল্পনা করছিল, তখন থেকেই। সে-সংখ্যাটা আর হয়নি, কিন্তু যোগাযোগ থেকে গিয়েছে। বইমেলায় দেখা হলে প্রতিবারই কিছু কথা হয়। নতুন কাজের পরিকল্পনা শুনি। সে জানাল আখ্যানসমগ্র-১ প্রথম সংস্করণ সমস্ত বিক্রি হয়ে গিয়েছে, এখন আর পাওয়া যাবে না। দ্বিতীয় সংস্করণ ছাপা হয়ে যাবে ২০২১ এর জানুয়ারিতেই। তাতে নতুন ভূমিকা সংশ্লিষ্ট হবে। ৫০টি গল্প নিয়ে আখ্যানসমগ্রের দ্বিতীয় খণ্ড ওরাই করবে। গল্পগুলো কম্পোজও হয়ে রয়েছে। আমি জানতে চেয়েছিলাম গল্পগুলির প্রথম প্রকাশের তথ্য, পত্রিকার নাম আর সাল তারিখ। সুদীপ্ত জানাল বরেন্দু মন্ডল বইটার ভূমিকা লিখছেন। দীর্ঘ ভূমিকায় সে সব তথ্য থাকবে নিশ্চয়। ভূমিকা লেখা শেষ হলে ২০২১ এর জানুয়ারিতে আমায় সেই লেখা থেকে তথ্যগুলি সে পাঠাবে।

সুদীপ্ত ব্যানার্জী

আরো জানাল, ইতিমধ্যে পীযূষ ভট্টাচার্যের লেখা সম্বন্ধে জানতে আমি আরেকজনের সাথে কথা কথা বলতে পারি, সে মূলত আখ্যানসমগ্র-১ এর কাজটা করেছে, পীযূষবাবুর লেখার সচেতন পাঠক। ধরলাম তাকে। সে কোনো সাহায্য করতে পারল না, সম্ভবত জীবিকাগত ব্যস্ততার জন্য। ফোনে কথা হল, হোয়াটসঅ্যপে প্রশ্ন পাঠাচ্ছি। নিরুত্তর। ফেসবুক আর ইন্টারনেট খুঁজে তখন দেখেছি, বালুরঘাট এর ‘উত্তরভাষা’ পত্রিকা কিছুকাল আগে, ৩ ডিসেম্বর ২০১৬ নাট্যতীর্থ মন্মথমঞ্চে সন্ধ্যেবেলা পালন করেছে পীযূষবাবুর ৭১-এ পা দেওয়ার জন্মদিন মহাসমারোহে।

‘অন্তরঙ্গ পীযূষ’ অনুষ্ঠান পরিচিতি ও আমন্ত্রণলিপি

১৫ মিনিটের যে ছোট্ট তথ্যচিত্র তৈরি হয়েছে তাঁকে নিয়ে – ‘অন্তরঙ্গ পীযূষ’, অনুষ্ঠানের নামেই, ইউটিউবে সকলের দেখার জন্যে রাখা হয়েছে সেটি।

অন্তরঙ্গ পীযূষ, তথ্যচিত্র, ১৫ মিনিট,
নির্মাণ : জয় নিরুপম ভাদুড়ি
জে.বি. ফিল্ম প্রোডাকশন
বাঁশুরি আর্টস
ভয়েস ওভার : সন্ত কুমার সরকার
সিনেমাটোগ্রাফি : পল মৈত্র
সম্পাদনা : চন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
সঙ্গীত : রয়ালটি ফ্রি মিউজিক
দলের সদস্য : গগন ঘোষ, বরুণ তালুকদার, রাজদীপ পাল, অনিমেষ কুমার ঘোষ, আকাশ সরকার
পীযূষ ভট্টাচার্য ছাড়াও বক্তব্য রেখেছেন :
অভিজিৎ মুখার্জি – বালুরঘাট এল.এম.এ.ইউ. বিদ্যালয়ের হেডমাস্টার
শুভেন্দু বক্সী – কবি
রিপন সরকার – বালুরঘাট কলেজের অধ্যাপক

এখানেই প্রথম দেখলাম বিভিন্ন বইয়ের প্রচ্ছদ। জানলাম তাঁর পিতা-মাতার নাম : জ্ঞানরঞ্জন ভট্টাচার্য ও নিভারানী ভট্টাচার্য

অনুষ্ঠানে পীযূষ ভট্টাচার্যের গল্পের উপর নির্মিত দুটি শর্টফিল্মও প্রদর্শনহয়েছিল, ‘নদী পুড়ে যাচ্ছে’ এবং ‘ভাসান’।

নদী পুড়ে যাচ্ছে, শর্ট ফিল্ম, ২০ মিনিট
চিত্রনাট্য ও পরিচালনা : শুভ্রদীপ চৌধুরী
ক্যামেরা : অরিন্দম এক্স ভৌমিক
আলো শব্দ সম্পাদনা : ভৌমিক ফটোগ্রাফি, বালুরঘাট
সহযোগিতা : শুভজিৎ, প্রিয়া
অভিনয় : কৃষ্ণেন্দু শেখর মহন্ত, অনন্যা সাহা, শুভ্রদীপ পাল

এছাড়াও, পীযূষ ভট্টাচার্যের উপর উত্তরভাষা পত্রিকার বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ, আর, তাঁর গল্পের বই ‘জলের বর্গক্ষেত্র’-এর আনুষ্ঠানিক প্রকাশও হয় সেদিন। তাঁর সাহিত্য নিয়ে আলোচনা করেছিলেন সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যপক রাজীব চৌধুরী এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বরেন্দু মন্ডল। রাজীব চৌধুরীকে ‘ভাষাবন্ধন’-এর আমর্ম সংসপ্তক হিসেবে চিনি অনেকদিনই। ‘উত্তরভাষা’ পত্রিকার সম্পাদক কৌশিক রঞ্জন খাঁ-র সাথে যোগাযোগ করলাম ফেসবুকেই, পত্রিকার পাতা থেকে পীযূষবাবুর লেখা প্রকাশের ডিটেল চেয়ে। তাঁর কাছে থাকা বইগুলির ডিটেলও যদি পাওয়া যায়, সেই আশায়।

কৌশিক রঞ্জন খাঁ

বিবলিওগ্রাফি করতে দরকার প্রচ্ছদ, প্রকাশ-মুদ্রণ ডিটেল, উৎসর্গ, মুখবন্ধ আর গল্পক্রম। গল্পগুলির প্রথম প্রকাশের তথ্য তো আস্তে আস্তে খুঁজতে হবে। লাইব্রেরিওয়ার্ক। পীযূষবাবু জানিয়েছেন, প্রথম প্রকাশের তথ্য তাঁর কাছেও বিশেষ নেই। কিন্তু এবার সমস্যা হল, এই দুজনকে যা জিজ্ঞাসা করছি তারা সেই প্রশ্ন আর প্রয়োজন পীযূষবাবুকেই জানাচ্ছেন। কৌশিকবাবু হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো প্রয়োজনের তালিকা সরাসরি পীযূষবাবুকে ফরোয়ার্ড করছেন। অথচ আমি তো চাইছিলাম লেখককে যথাসম্ভব কম বিরক্ত করে কাজটা করতে। চোখের দৃষ্টি ক্ষীণ হয়েছে পীযূষবাবুর। এতটাই যে, কিছুক্ষণ লেখালেখি করতে করতেই চোখ থেকে জল গড়াতে থাকে। আতস কাচের সাহায্যে পড়াশুনা করেন, তাও দুঃখ করলেন, ভালো আতস কাচ পান না বালুরঘাটে। এই বয়সে, দুর্বল শরীরে আনপ্যাক করে তাঁর লেখাপত্র, বইয়ের সুচী তাঁকে দিয়েই খোঁজাতে যদি হয়, তবে পাঠক হিসেবে লজ্জা পাবার কথা নয় কি? ফলে অন্য আরো সূত্রের খোঁজ শুরু করতে হল। পরে অবশ্য দুটি গুরুত্বপূর্ণ ডিটেলস কৌশিকবাবু পাঠিয়েছিলেন। প্রথমটি এই অন্তরঙ্গ পীযূষ অনুষ্ঠানটির ছবি, নিউজ পেপার কভারেজ আর ফেসবুক মন্তব্যসংকলন। সে সংক্রান্ত বাকি তথ্য ও ছবি ফেসবুক ইভেন্ট থেকে খুঁজে নেওয়া গেল।

অন্তরঙ্গ পীযূষ অনুষ্ঠানের ফটো অ্যালবাম 

অন্তরঙ্গ পীযূষ অনুষ্ঠানের পর ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মন্তব্য 

অন্তরঙ্গ পীযূষ অনুষ্ঠানের নিউজপেপার রিপোর্তাজ 

সম্মানগুলির তালিকা পাওয়া গেল ফেসবুকে রাখা পত্রিকার পাতা থেকেই।

মধ্যবর্তী সাহিত্য পত্রিকার সংবর্ধনা ২০০২

কবিতাপাক্ষিক এর সম্মাননা

‘বিশিষ্ট সাহিত্যিক সম্মাননা ও পুরস্কার’ – উত্তরবঙ্গ নাট্যজগৎ

Award for distinguished service in the field of literature (2008)

‘শান্তি সাহা স্মারক পুরস্কার’ – পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি (২০১০)

কবি জীবনানন্দ স্মারক সম্মান – এবং বিকল্প (২০১১) [জীবিসঞ্চার উপন্যাসের জন্য]

বিশিষ্ট সাহিত্য সম্মাননা – রুদ্রকাল (২০১৩)

বিমলা বর্মন স্মৃতিস্মারক পুরস্কার – সংবেদন (২০১৫)

বদরীপ্রসাদ বন্দোপাধ্যায় সম্মান – কথাজাতক (২০১৫)

রাধামোহন মোহান্ত স্মারক সম্মান – দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রেস ক্লাব (২০১৫)

বর্ণালী স্মারক সম্মান (উত্তরবঙ্গের সাহিত্য সংস্থা “উত্তরের রোববার”এর আয়োজনে কলেজস্ট্রিট সংলগ্ন বইচিত্র আর্ট গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত সাহিত্যসন্ধ্যায় প্রদত্ত)

দিবারাত্রি কাব্যের সম্মাননা

আমায় পীযূষ ভটাচার্যের লেখা পড়তে প্রথম উৎসাহ দিয়েছিল যে, সৈকত চট্টোপাধ্যায়, তার কাছে ছিল ‘জীবিসঞ্চার’ উপন্যাসিকাটি। 

জীবিসঞ্চার (উপন্যাসিকা)
পৃষ্ঠা : ৩৬,
প্রথম প্রকাশ : বইমেলা ২০০১,
গ্রন্থস্বত্ব : মাধুরী ভট্টাচার্য,
প্রচ্ছদ ও রেখাচিত্র : রবীন মণ্ডল,
প্রকাশক : প্রদীপ ভট্টাচার্য, রক্তকরবী, ১০/২বি, রমানাথ মজুমদার স্ট্রীট, কলকাতা ৭০০০০৯, দূরভাষ : ২১৯-৪০০৫,
অক্ষর বিন্যাস : দি ডি-কমলেসার, ৬০ সিকদারবাগান স্ট্রীট, কলকাতা ৭০০০০৪, দূরভাষ – ৫৫৪-৩৪৪৭,
মূল্য : ২০ টাকা,
উৎসর্গ : যাঁরা সেই সময়ে মৃত, অর্দ্ধমৃত / তাঁদের উদ্দেশে – ,
কৃতজ্ঞতা স্বীকার : রবীন মণ্ডল,
তিনটি শিরোনামায় বিভক্ত : 
প্রথম পর্ব : নিদ্রা কাহারে বলি জাগে কোন জন (পৃ ৭-১৭),
পর্বান্তর : পুষ্পে ছিল না যখন কোথায় ছিল গন্ধ / পুষ্প না ছিল তখন মৃত্তিকাতে ছিল গন্ধ (পৃ ২০-২৬),
পর্বান্তরের পরে : খিড়কির দ্বারে সর্বস্ব ঘরে যাবে চুরি (পৃ ২৯-৩৫)।
পৃ ৫, ১৯ ও ২৭ রচনার শিরোনামাঙ্কিত শূন্য পৃষ্ঠা। প্রচ্ছদ ব্যতীত ৬, ১৮, ২৮, ৩৬ পৃষ্ঠায় রবীন মণ্ডলের ছবি রয়েছে যথাক্রমে 7/7/99, 15/11/98, 23/7/99, 17/8/99 তারিখে আঁকা।

ফেসবুক থেকেই ইতিমধ্যে আরো দুজনের খোঁজ পেলাম। একজন রঞ্জন রায়, ফলাকাটা কলেজের অধ্যাপক। নিজের পোস্ট তিনি রাখেন “@ নির্বোধের ডায়রি থেকে” – শিরোনামে। পীযূষবাবুকে নিয়ে ০৯-১২-১৯ তারিখে একটি পোস্টে তিনি সম্যক আলোচনা করেন। পীযূষবাবুর প্রথম প্রকাশিত বইটি কবিতাগ্রন্থ। কবিতার এই একটিইমাত্র বই তাঁর। এ বিষয়ে বিশদে আলোচনা করেছেন রঞ্জনবাবু আরেকটি ফেসবুক পোস্টে। এই আলোচনার ডায়রি তারিখ ০৪-০৬-২০২০

রঞ্জন রায়

কবিতার বইটি একেবারেই দুষ্প্রাপ্য। যদি কপি থাকে এই আশায় যোগাযোগ করে জানলাম ১৯ দিন হাসপাতালে থেকে প্রায় মৃত্যুমুখ থেকে কোভিডযুদ্ধে বিজয়ী হয়ে সবে বাড়ি ফিরেছেন, বইপত্র খোঁজাখুজি করার পক্ষে শরীর অসম্ভব দুর্বল । পরে রিপন সরকার, যাকে এই উপরেই তথ্যচিত্রের ভিডিওতে বলতে শোনা গেছে, বইটির ডিটেলস পাঠান।


মহিম্ন অসুখ মহিম্ন যন্ত্রণা (কবিতা সংগ্রহ),
পৃষ্ঠা : ৩৭, ৩৩টি কবিতা,
রচনাকাল : ১৯৭৩ থেকে ১৯৮৭,
প্রথম প্রকাশ : কলিকাতা বইমেলা, ১৯৯১,
প্রচ্ছদ : সর্বোজিৎ সেন,
গ্রন্থস্বত্ব : মাধুরী ভট্টাচার্য,
প্রকাশক : একুশে, ১৩/১, বঙ্কিম চ্যাটার্জী স্ট্রীট, কলিকাতা – ৭৩,
মুদ্রক : এস কর্মকার, রামকৃষ্ণ প্রিন্টিং হাউস, ৬৯/১/১বি, বদ্রীদাস টেম্পল স্ট্রীট, কলিকাতা – ৪,
দাম : দশ টাকা,
উৎসর্গ : বাবা ও মা’কে,
প্রথম কবিতাটি যেমন ১৯৭৩-এর তেমনি শেষেরটি ১৯৮৭’র। দীর্ঘ এ-ক’বছরের লেখা থেকে নির্বাচন করে এ সংকলন। প্রায় পনের বছরের ব্যবধানে প্রকাশিত একটি কবিতা’র পঙতি “দিনগুলি / আইবুড়ো মেয়ের সোহাগী বেড়ালের মতো / কেটে যায়”—উদ্ধৃতি শুনে চমকে উঠেছিলাম। সেই পাঠক বক্তাই এ সংকলনের প্রেরণা। এ ছাড়া আর বলবার কথা শুধু এই যে, বইটি প্রকাশের ব্যাপারে যারা সাহায্য করেছেন তাঁদের কথা। পীযুষ ভট্টাচার্য, চকভবানী, বালুরঘাট,
গ্রন্থটি দুটি ভাগে বিভক্ত :

•••দরজার বাইরে ঝড়•••
ভীষণ মহিম্ন অসুখ ১
আমি এবং আমার রাম ছাগল ৩ 
জল গর্জনের জন্য ৫ 
অন্তরীক্ষে জলে স্থলে ৭ 
বৃষ্টি মাথায় করে ৮ 
দেরী হলে ৯ 
খুন করা লাশ ১০ 
কালে দিনে ১১ 
কাছেই তো আছি ১২ 
খর্বুটে চাঁদ ১৩ 
এইভাবে চিরকাল চলে না ১৪ 
বীজকে বেরতেই হবে ১৫ 
নদী কাকে বলে ১৬ 
ইয়াসিনের ছেলে ইয়াসিন ১৭

‘ফটিক জল’ সুর পুষে•••
ঢ্যামনা অজগর ১৯ 
দেবী মূর্ত্তি ২০ 
চক্ষুজ্বলে ২১ 
বাইপাশ ২২
সেই তাকে ২৩
বেরিয়ে পড়ি ২৪ 
দীর্ঘতমাকে উড়ো চিঠি ২৫ 
ছুটতে ছুটতে নাচতে নাচতে ২৬ 
মাতৃস্রোত ২৭ 
ভেলা ভেসে যায় ২৮ 
নীলকণ্ঠ ২৯ 
শান্তির জল ৩০ 
বন্দীশালার কবিতা ৩১ 
মধ্যযামে ৩২ 
শস্য ছুঁয়ে ৩৩ 
পাখি জানে ৩৪ 
বানপ্রস্থে কেমন আছো ৩৫ 
শিরনামহীণ স্বপ্ন ৩৬ 
শঙ্খধ্বনি ৩৭

অন্যজন তরুণ কবি, শতানীক রায়। নিয়মিতভাবে পীযূষবাবুর লেখা নিয়ে, বইয়ের পাঠপ্রতিক্রিয়া নিয়ে পোস্ট দিতে দেখেছি তাঁকে। গুরত্বপূর্ণ ছিল তালপাতার ঠাকুমা বিষয়ে তাঁর আলোচনা

শতানীক রায়

শতানীক খুব সাহায্য করলেন। প্রথমেই পাঠালেন চর্চাপদের গল্পগ্রন্থটি নিয়ে করা তাঁর আলোচনা।

পীযূষ ভট্টাচার্যের গল্পগ্রন্থ : কৃষ্ণবর্ণ ষাঁড়ের পিঠে – কথক, ২০২০ বর্ষ ১৩ সংখ্যা ১, সম্পাদক শতদল মিত্র পৃ ৭-২০

এই আলোচনার অঙ্কুর ছিল শতানীকের একটি ফেসবুক পোস্টে। আনন্দবাজারে ছাপা হয়েছিল পুস্তক পরিচয় – কৃষ্ণবর্ণ ষাঁড়ের পিঠে – আনন্দবাজার পত্রিকা শনিবার ৩০ মার্চ ২০১৩, ১৬ চৈত্র ১৪১৯ । বইটার ডিটেলস পাঠাল সৈকতদা, নিজের কপি থেকে।


কৃষ্ণবর্ণ ষাঁড়ের পিঠে (গল্প সংকলন), (১৫ টি গল্প),
পৃষ্ঠা : ১৫৮,
প্রথম প্রকাশ : বইমেলা জানুয়ারি ২০১৩,
গ্রন্থস্বত্ব : মাধুরী ভট্টাচার্য,
প্রকাশক : বিশ্বদীপ ঘোষ, চর্চাপদ পাবলিকেশন প্রাইভেট লিমিটেড, ১৩ বি রাধানাথ মল্লিক লেন, কলকাতা ৭০০০১২, ফোন ০৩৩ ৩৩৫৭৩১৪৪,
অক্ষরবিন্যাস ও মুদ্রক : মুদ্রাকর, ১৮এ রাধানাথ মল্লিক লেন, কলকাতা ৭০০০১২,
প্রচ্ছদ : রাজীব চক্রবর্তী,
ISBN : 978-93-80489-26-1,
মূল্য : ১৮০ টাকা,
উৎসর্গ : রাজশ্রী সাহা ও শংকর সাহা’কে
গল্পক্রম :
সান্ধ্যচ্ছটা – ৯ (২০০৯)
ছায়ার ভিতর অন্ধকার – ২০ (২০০৯)
জলসত্র – ৩১ (২০১০)
ইসরাইলি হলুদ খঞ্জন – ৪০ (২০০৯)
পাইন অ্যাপেল ফ্লেভার – ৪৭ (২০০৯)
জ্যোৎস্নার অপচ্ছায়া – ৫৬ (২০০৯)
মৌনতার বুধবার – ৬২ (২০১০)
কৃষ্ণবর্ণ ষাঁড়ের পিঠে – ৭৯ (২০০৯)
সোমবার – ৯৩ (২০১০)
নিরাপদ আত্মগোপন – ৯৯ (২০১০)
কুরুক্ষেত্রে একা দ্রৌপদী – ১০৭ – (২০১০)
পৃথিবীর সবচেয়ে লম্বা লোকটি – ১১৬ (২০১০)
ছাপ্পান ছাপ্পা – ১২৮ (২০১০)
আর্তনাদের উদারা-মুদারা-তারা – ১৪০ (২০১০)
ফতেমা বিবির কাবিননামা – ১৫০ [?]   

বরেন্দু মন্ডলের যোগাযোগ দিলেন শতানীক। বরেন্দুবাবু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ হেড করেন বর্তমানে। ৫০টি গল্প প্রথম বই করার কথা ছিল ‘সোপান’ প্রকাশনার তরফে, দুবছর আগেই। সব গল্প কম্পোজ হয়ে যাওয়ার পরেও তারা ফেলে রেখেছিল অনেকদিন। অবশেষে ‘তৃতীয় পরিসর’ দায়িত্ব নেয়। পুরো ব্যপারটার হোতা প্রথম থেকে বরেন্দুবাবুই। গল্পের বইটার ভূমিকা লেখার জন্য গোটা কম্পোজড ম্যাটারটা তার জিম্মায় এখন। ফোন করে জানালাম বিবলিওগ্রাফি বানাচ্ছি। খুবই উচ্ছ্বসিত হলেন। তিনি ছাত্রদের এই কাজ করতে উৎসাহ দিয়েও কৃতকার্য হননি জানিয়ে আমায় যথাসম্ভব সাহায্যের প্রতিশ্রুতিই দিলেন। জানালেন পীযূষবাবুকে নিয়ে একটা গোটা বইয়ের কাজ চলছে। অর্থাৎ পুরো বই জুড়ে তাঁর লেখার আলোচনাই থাকবে। বিবলিওগ্রাফিটিকে সেই বইতে ছাপতে চান বলেও জানালেন। 


বরেন্দু মন্ডল

পীযূষবাবুই বলেছিলেন, তাঁকে নিয়ে বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষনার কাজ শুরু হয়েছে। খোঁজ নিয়ে দেখলাম, এম. ফিল. হয়েছে বা হচ্ছে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক নিখিলেশ রায়-এর গাইডেন্সে সম্ভবত রাজনৈতিক গল্প নিয়ে, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে, সম্ভবত সেন্ট জেভিয়ার্সেও কিছু কাজ হচ্ছে। বরেন্দুবাবু বলেননি যদিও, পরে জেনেছি তাঁর অধীনেও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন এম. ফিল. করছে পীযূষ ভট্টাচার্যের সাহিত্যের কোনো এক দিক নিয়ে। তিনি বিভিন্ন বইয়ের ডিটেলস পাঠালেন। অনেক সুবিধে হল, বেশিরভাগই হয়তো পাওয়া সম্ভব ছিল না। প্রথমেই পাঠালেন উত্তরভাষার ২০১৬ ডিসেম্বর মাসের সংখ্যাটি। 


উত্তরভাষা – ৯ বর্ষ ২ সংখ্যা, শীত সংখ্যা ডিসেম্বর ২০১৬ (১৪২৩) : অন্তরঙ্গ পীযূষ
২০ টাকা
ISSN : 2349-2457,
সম্পাদক : কৌশিকরঞ্জন খাঁ
সম্পাদকীয়
এক নজরে পীযূষ ভট্টাচার্য
সম্মাননা
প্রকাশিত বই
প্রকাশিত গল্প অথচ এখনও গ্রন্থভূক্ত হয়নি
উল্লেখযোগ্য সাক্ষাৎকার
দশটি প্রশ্ন পীযূষ ভট্টাচার্যকে
দেবেশ রায় – অনুপস্থিতির শিল্প (গল্পবিশ্ব থেকে পুণর্মুদ্রণ)
সুধীর চক্রবর্তী – দৃশ্যমান অন্তরাল (গল্পবিশ্ব থেকে পুণর্মুদ্রণ)
রমাপ্রসাদ নাগ – ‘নিরক্ষ রেখার বাইরে’ বৃত্তের বাইরে নয়
রাঘব বন্দ্যোপাধ্যায় – বিনা রক্তপাতে দাঁত তোলা অসম্ভব নয় (গ্রন্থ সমালোচনা – তালপাতার ঠাকুমা) (?)
কৌশিকরঞ্জন খাঁ – পীযূষ থেকে পীযূষ পর্যন্ত
শুভ্রদীপ চৌধুরী – পীযূষ ভট্টাচার্যের দেশ সম্পর্কে সতর্কতা
বরুণ তালুকদার – লেখক ও পাঠক পীযূষ ভট্টাচার্য
সন্দীপন নন্দী – পীযূষদা এক দরজাখোলা নদী
আত্রেয়ীর তীর ধরে ফেরা বাচকের ভূমিকায় – পীযূষ ভট্টাচার্য (?, কলাম: ভূমিপুত্র, ছবি সন্দীপ পাল)
পীযূষ ভট্টাচার্য : পুরস্কার প্রাপকের অভিভাষণ – শান্তি সাহা স্মারক পুরস্কার (বাংলা অ্যাকাদেমী)

এখানে রাঘব বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা গ্রন্থ সমালোচনাটি আর পীযূষ ভট্টাচার্যের লেখাটি অন্য পত্রিকা থেকে পুণর্মুদ্রণ বলেই মনে হয়, কিন্তু উৎস উল্লেখ নেই। বরেন্দুবাবু নিজেও একটি বড় লেখা লিখেছিলেন এ বিষয়ে, সেটাও পাঠালেন।

জীবনের সেই সব নিভৃত কুহক : পীযূষ ভট্টাচার্যের গল্প – দিবারাত্রির কাব্য, ১৮ বর্ষ ১-২ সংখ্যা, জানুয়ারী – জুন ২০১০, (সম্পাদনা : আফিফ ফুয়াদ) পৃ. ১১৯-১৩৫

পাঠালেন প্রকাশিতব্য আখ্যানসমগ্র-২ (৫০টি গল্প)-এর সূচী)। অমল বসু সম্পাদিত ‘প্রতিলিপি’ পত্রিকাতে ১৯৮০ সালে পীযূষবাবুর প্রথম গল্প প্রকাশিত হয়, ‘গরম ভাত’। এতকাল অগ্রন্থিত সেই গল্প এই প্রথমবার ৫০টি গল্প গ্রন্থভুক্ত হচ্ছে। গল্পগুলির পাশে বরেন্দুবাবুর হাতে লেখা প্রকাশকাল বা রচনাকাল দেওয়া আছে যদিও, কিন্তু পরে পত্রিকা প্রকাশ মেলাতে গিয়ে অনেক সময়েই গরমিল লক্ষ্য করেছি। পত্রিকা প্রকাশ-এর সে গরমিল বইতে গল্পের সাথে ছাপা প্রকাশকাল এর তথ্যের ক্ষেত্রেও রয়েছে অনেকক্ষেত্রেই। পীযূষবাবু সম্ভবত প্রকাশিত পত্রিকার পাতা থেকে নিজের লেখাটি আলাদা করে ফাইলবন্দী রাখেন। সেইটুকুই সংরক্ষিত। সব পত্রিকা গোটাটাই সংরক্ষণ করাও দুঃসাধ্য, অনেকই তো মোটা মোটা পুজোসংখ্যা। তাছাড়া তাঁর বক্তব্য, বেশিরভাগ লিটিল ম্যাগাজিনই স্বল্পায়ু। যখন প্রকাশিত হয়েছিল, হয়তো খুবই উৎসাহের আবহ ছিল, কিন্তু কালের নিয়মে অনেকেরই সম্পাদক প্রয়াত, বা হয়তো পত্রিকা বন্ধ হয়ে গেছে, কপি পাওয়া সম্ভব নয়। তাদের উল্লেখ করার মানেই নেই কোনো। আবার কিছু লেখার পত্রিকা প্রকাশ উল্লেখ না করলে, বাকিদের উল্লেখও অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। তাই তিনি বইতে কোনো গল্পেরই পত্রিকা প্রকাশ উল্লেখ করেন না। বিবলিওগ্রাফির নিয়ম তো তা নয়, এতো একরকম ইতিহাসকে সংরক্ষণ করা। এমনকি কোনো লেখার সাথে অলঙ্করণ থাকলেও সেগুলো উদ্ধার করা উচিত, ফলে কাজ কিছু কঠিন হল আর কি।

যে বইগুলি এখন আর পাওয়া হয়তো সম্ভবই নয় সেগুলির তথ্য বরেন্দুবাবু নিজের সংগ্রহ থেকেই দিলেন। প্রথমে এই বইটির প্রচ্ছদ বাদে বাকি তথ্যের পাতাগুলি পাঠিয়েছিলেন, পরে আর খুঁজে পাননি বইটিকেই। পীযূষবাবুরই দ্বারস্থ হয়ে প্রচ্ছদটি সংগ্রহ করা গেল বটে, তবে আলোর প্রতিফলনের সমস্যার কারণে আবার প্রচ্ছদটির ছবি সংগ্রহ আবার করতে হল রিপন সরকারের বদান্যতায়।


ঠাকুমার তালপাখা ও অন্যান্য গল্প (গল্প সংকলন), (১২ টি গল্প),
পৃষ্ঠা : ৯৫,
প্রথম প্রকাশ : জানুয়ারি ২০০৬,
প্রচ্ছদ : রাজীব চক্রবর্তী,
মুদ্রণ : নিউ সারদা প্রেস, ৯সি, শিবনারায়ণ দাস লেন, কলকাতা ৭০০০০৬,
প্রকাশক : পার্থশঙ্কর বসু, নয়া উদ্যোগ, ২০৬, বিধান সরণি, কলকাতা ৭০০০০৬,
মূল্য : ৪০ টাকা,
ISBN : 81-85971-52-8,
গ্রন্থস্বত্ব : মাধুরী ভট্টাচার্য ,
উৎসর্গ : সুহাশীষ ও জুঁই কে,
নিবেদন : 
ইদানীং আমি একজন ঠাকুমা এবং অস্ত্রের পরিবর্তে তালপাখার সন্ধান পেয়েছি—এসব নিয়ে আপাতত তিনটি গল্প এখানে আছে। আর আছে, যৌনতা নিয়ে কিছু প্রশ্ন যা অনায়াসে এ বয়সে পৌঁছে তোলা যায়।। যে প্রশ্নের মীমাংসা হয়নি এখনও—রূপকথা কি মাতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার সময়ের ? এরকম ‘একসময়’ অন্বেষার কথাও এখানে আছে যার অধিকাংশই ২০০৪ থেকে ২০০৫-এর মধ্যে প্রথম প্রকাশ। ব্যতিক্রম যা আছে তা এ সময়কালের মধ্যে প্রকাশিত এবং এ সময়ে পরিমার্জিত প্রকাশিত রূপটি এখানে রাখা হল – যা সর্বশেষ। তবে, আমার বিশ্বাস—গল্পই হয়ে ওঠে শেষ পর্যন্ত সংকলনের প্রকৃত ভূমিকা। সুহৃদ প্রকাশক পার্থশঙ্কর বসু-কে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি ক্রমান্বয়ে আমার গল্প সংকলন প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য।। পীযূষ ভট্টাচার্য, বালুরঘাট, দক্ষিণ দিনাজপুর
গল্পক্রম:
কুয়াশার ভিতর মাংসের উৎসব – ৭ (২০০৫)
বৃষ্টির দেবদেবী – ১৬ (২০০৪)
কুকুর বিষয়ক একটি রচনা – ২৫ (২০০২)
নদী পুড়ে যাচ্ছে – ৩১ (২০০৪)
যমের বোন যমুনা – ৩৭ [?]
সদানন্দের পত্রবান্ধবীদের প্রতি – ৪৬ [?]
লুপ্ত জলাশয়ে – ৫৩ [?]
উই পিঁপড়েদের পাখনা গজাবার সময় – ৬০ (২০০৫)
শূন্য কফিন অথবা মৃতের হাঁটবার গল্প – ৬৮ (২০০৫)
ঠাকুমার তালপাতার হাওয়ার ভিতর – ৭৬ [?]
ভবনদীর ঘাটে – ৮২ (২০০৫) 
শূন্য অথবা নকশা ফুলের সুগন্ধ – ৮৯

যাদবপুরে যেহেতু এনিয়ে কাজ চলছে, কিছু বই ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে রয়েছে জানালেন।


পদযাত্রায় একজন (গল্প সংকলন), (১২ টি গল্প),
পৃষ্ঠা : ৮০,
প্রথম প্রকাশ : জানুয়ারি ২০০৪,
গ্রন্থস্বত্ব : মাধুরী ভট্টাচার্য ,
মুদ্রণ : নিউ সারদা প্রেস, ৯সি, শিবনারায়ণ দাস লেন, কলকাতা ৭০০০০৬,
প্রকাশক : পার্থশঙ্কর বসু, নয়া উদ্যোগ, ২০৬, বিধান সরণি, কলকাতা ৭০০০০৬,
মূল্য : ৪০ টাকা,
ISBN : 81-85971-12-9,
উৎসর্গ : স্নেহভাজন / ঝিমলি ও শুভেন্দু বকসীকে,
গল্পক্রম:
পদযাত্রায় একজন – ৯ (২০০২) 
অভিষপ্ত দেবদূত – ১৭ (২০০২) 
গত বছরের রূপকথা – ২৫ (২০০৩) 
মধুবনী – ৩১ [?]
নিয়ন্ত্রিত ভালোবাসার গল্প – ৩৫ [?]
মেয়েমানুষের গল্প – ৪০ (২০০২) 
সবুজ টিয়ার সাথে কিছুক্ষণ – ৪৬ (২০০২) 
মালতীর প্রকারভেদ – ৫৩ [?]
স্বপ্নের বাস্তবতা – ৫৯ [?]
চোরাকুঠিতে একা এবং কয়েকজন – ৬৪ [?]
পশু – ৬৯ (২০০২) 
সমাধানসূত্র – ৭৫ (২০০০) 

জানিনা, দীপ প্রকাশন বা নয়া উদ্যোগ-এ খোঁজ করলে এই বইগুলো এখনো পাওয়া যাবে কিনা। ‘নির্বাচিত গল্প’তে বেশিটাই আগের সংকলনের গল্প হলেও কিছু নতুন অগ্রন্থিত গল্পও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

নির্বাচিত গল্প (গল্প সংকলন), (২০ টি গল্প)
পৃষ্ঠা : ১২০,
প্রথম প্রকাশ : ডিসেম্বর ২০০৪,
প্রচ্ছদ : আশিস দত্ত,
প্রকাশক : শংকর মণ্ডল, দীপ প্রকাশন, ২০৯এ বিধান সরণি, কলকাতা ৭০০০০৬,
বর্ণসংস্থাপন : আই. ই. আর. ই. ২০৯এ বিধান সরণি, কলকাতা ৭০০০০৬,
মুদ্রক : কম্পু কলার, কলকাতা – ৭০০০৬৭,
মূল্য : ৮০ টাকা,
উৎসর্গ : সুহৃদ্বর সমীর ভট্টাচার্য / ও / কিশলয় রায়-কে
ভূমিকার পরিবর্তে: 
দূরে অবস্থিত কোনো রাজ্যের অধীশ্বর হওয়া অপেক্ষা তোমার জলে মৎস্য কিংবা কচ্ছপ হওয়া অধিকতর বাঞ্ছনীয় বলে প্রাচীন কবির ‘হে মাত: আত্রাই’-এর কাছে নিবেদন যেন মধুবনী’ নকশা হয়ে ওঠে। অসম্ভব, অলীক, প্রগলভ শোনাতে পারে তবুও নদীতে পদ্ম ফুটে জীবনের প্রতীক হয়ে উঠুক, এ প্রতিদিনের প্রার্থনা। নদীর মাছ বা কচ্ছপের আর্কেটাইপের মধ্য দিয়ে বাঁচতে চাওয়া কি খুব বেশি বেশি চাওয়া? চাওয়া যেতেই পারে মধুবনীর সমস্ত নকশাটির পরিপূর্ণতা। 
নদী তো ১৭৭৭-এর বন্যায়, ১৮৯৭-এর ভূমিকম্পে জরাগ্রস্ত-জরতী নদী এখন বুকে হেঁটে চলে। তথাপি ১৯৪৬-এর ডিসেম্বরে জন্ম নেওয়ার জন্য আশ্রয় দিয়েছিল তীরবর্তী শহর বালুরঘাটে। বালুরঘাট মামাবাড়ি। কলকাতার চিৎপুরের থ্রি বাই এফ ব্রজকুমার শেঠ লেন থেকে দেশের বাড়ি রংপুর নীলফামারি, সেও এক উত্তরবঙ্গে, চলে আসতে হয়েছিল। সেখান থেকে বালুরঘাট। কলকাতার বাইলেনের স্মৃতি খুব একটা সুখের নয় – সেখানেই প্রথম মৃত্যু দেখা। আলতা রাঙানো লাল টুকটুকে দুটি পা নিয়ে রানির মতো চলে গিয়েছিল সরস্বতীদি, খেলার সঙ্গী। অন্ধত্বের চৌকাঠে দাঁড়ানো কানুদার ঘরে সবসময় জ্বলত সবুজ আলো। তাকে বলে যেতে হয়েছিল কী কী ঘটেছে এখন। বাচকের এই রকম ভূমিকা থেকে হঠাৎ চলে যাওয়া নীলফামারিতে। সে এক অন্য দেশ, তামাক পাতার ওপর জল-শিশিরের আয়নাতে মুখ দেখা, নাম লিখে রাখা। 
বেলা বাড়লেই বাষ্প হয়ে লোপাট বর্ণমালা। আকাশে মেঘের ভিতর সে বর্ণমালার অন্বেষণ এক বিপত্তির কাল গেছে। সে আকাশ কলকাতার আকাশ নয়, লম্বা, চৌকো, নানা কিসিমের ফ্রেম বাঁধানো। বিরাট আকাশ, খোলা। খুঁজে না পেয়েই তখনই বুঝি তৈরি হয়েছিল এক সংকট, তার পরিণতি বুঝি এমনই হওয়া যৌক্তিক আজ। 
তাই বুঝে নিচ্ছি মাটিতে দাঁড়িয়ে একমুঠো ধুলো শুঁকে বৌদ্ধচৈত্য ছিল কোনও একদিন এখানে। প্রত্যাশায় থাকতে হয় এই বুঝি ভিক্ষুণী মেখলা এসে শুনিয়ে যাবে ‘সঙঘম শরণম গচ্ছামি’। মৌর্য, সুঙ্গ, গুপ্ত, পাল ও মুসলিম, পাঁচ-পাঁচটি যুগের স্তরের ওপর দাঁড়িয়ে পুনর্ভবার তীরবর্তী এক এক সময় এখনই বর্তমান হয়ে ওঠে পাঁচটি যুগের জনপদ রাজপাট, যুদ্ধ, ধর্মের বিভিন্ন উপাচারের পুনরভিনয় হয়ে যায় চকিতে, পাঁচটি সভ্যতার উত্তরাধিকারও যেন পেয়ে যাওয়া। সে এ সব ছেড়ে চলে যাওয়া—সে যায়। সে শুনতে পায় না কৈবর্ত বিদ্রোহের হুংকার—পরাজিত বখতিয়ারের অশ্বখুরের ধ্বনির মিলিয়ে যাওয়া। দেখতে পায় না সন্ন্যাসী বিদ্রোহের মজনুশাহর তরবারিতে জ্যোৎস্নার হিরন্ময়।
একটা মানুষ একটা জীবন কাটাতে পারে তুলসী গাছ নিয়ে, আর আমার তো তিন তিনটে নদী—আত্রাই, পুনর্ভবা, টাঙ্গন। আর তিন নদী এক বেণী বেঁধে রূপসী হয়ে গেছে কখন জানি না, তবে মজে আছি। ৫৮ সাল থেকেই। চলে যাওয়া যেমন আছে, মজে যাওয়াও আছে। নতুন শিলাখণ্ডের লিপি উদ্ধারের তন্ময়তার মধ্য দিয়ে কাটিয়ে দিলেন কেউ একটা জীবন। এ থাকা অন্যভাবে থাকা। মায়াবী হাতছানি এড়িয়ে সমসময়ের ইশারা উপেক্ষা করে থাকা। একটা সময় ছিল উত্তর-দক্ষিণ দুই বঙ্গের মানুষের কাছে যাওয়ার ব্রত। আশির দশকে এসে বাইরের ছোটাছুটি বন্ধ হলেও ভিতরে ভিতরে নিরন্তর ছোটাছুটি চলতে শুরু করে দেয়। তখনই গদ্য লেখার শুরু। এখন তো ইন্টারনেটের দৌলতে সারা পৃথিবী জুড়েই বন্ধুত্ব। তাঁরা ভারতবর্ষের কয়েকটি শহরের নাম জানেন, তার মধ্যে কলকাতা। উত্তরবঙ্গ বোঝেন না, আমি বলি পশ্চিমবঙ্গে থাকি। আমার জানা এমনও মানুষ আছেন ইতিহাসের মিসিং লিঙ্ক খুঁজবার জন্য ভারতবর্ষ চষে বেড়াচ্ছেন। তাঁরা বলে ভারতবর্ষে থাকি। 
তরাইয়ের মেঘ গলিত ধাতুর মতো সগর্জন নেমে প্রতিমা ছাঁচে পড়ে স্বর্ণমূর্তি হয়ে যায় হেমন্ত। পর্ণমোচী বৃক্ষের পাতা ঝরে পড়াতেই মনে হয়, পরিযায়ী পাখিদের আসবার সময় হয়ে গেছে। এমন এমন গ্রাম আছে যেখানে প্রতিটি গৃহেই পাওয়া যাবে দোতারা। রাস্তার দু’ধারে চলতে চলতে ইচ্ছার পতাকা ন্যাকরাকালী বা পিরের বৃক্ষে লটকে দিতে পারি। আমাদের ব্যক্তিগত সুখদুঃখ ‘হালুয়া’ বলে ‘হালুয়ানি’ শোনে। মুখোশ পরা জোড়াবলদ মাথা নেড়ে সম্মতি জানাতে জানাতে অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেলে মুদ্রা পালার মধ্যেই ক্লান্ত হয়ে ঝিমুতে থাকে। দুঃখের কাহন আর কত? তখনই নিজের ভিতর আড়বাঁশি আর্তনাদ করে ওঠে, প্রতিবাদ কোথায়? কোনো কোনো প্রতিবাদ আত্মপ্রতিষ্ঠার নামান্তর মাত্র, জানি। কিন্তু এত দিনে খাঁপুরের তেভাগার শহীদ যশোদারানি যশোদা মা হয়ে গেছেন। সময়ে তো এ ভাবেই হয়। তবে কি আমরা নিরক্ষরেখার বাইরে ?
লেখাও এভাবেই হয়। এভাবেই পৌঁছোতে চাই শিকড়ে। সব জীবনই তো দুঃখের। ভালোবাসাও দুঃখেরই। বলা যেতে পারে এ সত্যিকারের বেঁচে থাকার দুঃখ। পরজন্ম নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই। কেননা এ জন্মেই তো বার বার করে জন্ম নিতে হচ্ছে। এ জন্ম নেওয়ার মধ্যে আছে যতটা তেজ তার চেয়ে বেশি কষ্ট। তার জন্যই শব্দের সীমানা ছাড়িয়ে শব্দ শোনানোর দায় থেকে গেছে জীবনে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রমূলে আঁকড়ে থাকার কৌশল বার করতে হয়। এ এক অদ্ভুত ব্রতচারণ, কেননা ব্রতচারের উদ্দেশ্যেই তো মানুষে পরিণত হওয়া।
এখানে দেবতারাও পাঁচ বোন। মাঝ রাতে বিরাট এক ভূমিতে, মাথার ওপর নক্ষত্রের সামিয়ানা। তারই নীচে পাঁচ বোনে কড়ি নিয়ে উপুড়-চিৎ খেলেন। নির্জন রাতে রাস্তায় হেঁটে গেলে দেহাভ্যন্তরে, সত্তার জঠরে গড়ে ওঠে এক মহাশূন্যতা। মাথার ওপর মহাজাগতিক বিস্ফোরণ, সৃষ্টির বিগ ব্যাং। তারই প্রতিধ্বনি শুনবার জন্য কুহকাচ্ছন্ন হয়ে আছি। এই কি সেই কুহক! যার টানে এক কোজাগরে যেখানে আত্রাই নিজেকে সরিয়ে একটু প্রতিবাদী সাহসী খাঁড়ি হয়ে চলে গেছে, সেখানে গ্যারিটি ব্রিজ। এইসব পেরিয়ে চলে গিয়েছিলাম মূল আত্রাইয়ের কূল ঘেঁষে বহুদূর – তখন বয়সই বা কত? পাঁচ-ছয় হবে। মামাবাড়ি থেকে মাঝরাত অবধি খুঁজে পেয়ে বাড়ি নিয়ে গিয়ে ধানদূর্বা দিয়ে বরণ করে ঘরে তুলেছিল। নদী যে আমাকে ফিরতে দিয়েছে তার জন্যই কি উপচারের আয়োজন ছিল সেদিন? 
পুনর্ভবায় এখনও তো কার্তিকের রাতে ঘট ভরে সরষের তেল দিয়ে প্রদীপ জ্বালিয়ে ভাসানো হয় সন্তানের আকাঙ্ক্ষায়। কোন্ সে পুরুষ পার্বতীর নৃত্যের নিক্কণ বর চেয়েছিল। দক্ষরাজার কাছে, সেট টক্কণ তুলে নেমে আসাই তো আজকের টাঙ্গন।
আত্রাইয়ের নাব্যতা ফিরে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষায় আছি। ময়ূরপঙ্খি নৌকা ভেসে যাবে। নদীর প্রতিটি বাঁকের ঘূর্ণির প্রকোপ থেকে বাঁচবার জন্য মাঝিরা মশানকালী বা সত্যপিরের গান গেয়ে উঠবে। নদীপথের পাশে থাকুক না আধুনিক রাস্তা। ছুটে যাক সভ্যতার দ্রুততম যান। অসম্ভব এক মেলবন্ধনের কথা ভাবি সবসময়।
সত্যি আছি কি সেই অপেক্ষায় ? তবে কেন বারবার এসে দাঁড়াচ্ছি আত্রাইয়ের তীরে? মুগ্ধ দৃষ্টি নিয়ে? মুগ্ধতার গহিনে ডুবে যেতে চাই বলে এই আসা। যেমন দৈত্য, আত্রাইয়ের রূপে মুগ্ধ হয়ে পথ ভুলিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল নদীকে। আত্রাই তো পতিতোদ্ধারিণী সর্বসন্তাপহারিণী পুণ্যতোয়া। গঙ্গা তখন আত্রাইকে উদ্ধার ও দৈত্যনিধনের শেষে আত্রাই উদ্ধার হল কই? তিন দেবদূতই প্রেমে পড়ে গেলেন। মুগ্ধ হয়ে আত্রাইকে স্পর্শ করতেই মুহূর্তে তারা তিনজন ফুলবৃক্ষ। ফুল দিয়ে আজীবন পুজো করে যেতে হবে এ রকম অভিশাপের কথাই কথিত। ও ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে ঊর্ধ্ব দু’বাহুতে পাতার উপদ্রব ঘটে। কলি থেকে ফুল ফুটে ঝরে যায় নদীতে। রাত্রির ফুল। ভোর হলেই পরিচিত ফুলেই গন্ধে বুঝি আমরা আছি। ছিলাম। এ ভাবেই থেকে যেত হয় আমাদের। ফিরে আসতে হয় বাচকের ভূমিকায়। যার শুরু সবুজ আলোর ভিতর অন্ধকে শোনাবার জন্য।
এখন পর্যন্ত কোনো গল্পগ্রন্থে সংকলিত হয়নি সেরকম কিছু গল্প এ সংকলনে আছে। প্রতিটি গল্পের শেষে প্রকাশকাল দেওয়া আছে। সেখানে ব্যবহৃত হয়েছে সর্বশেষ সংশোধিত প্রকাশের সময়কাল। দু-একটি গল্পের ক্ষেত্রে স্মৃতির ওপর নির্ভর করতে হয়েছে। 
বিশিষ্ট বন্ধু, কথাসাহিত্যিক শচীন দাশের সর্বাত্মক সাহায্য না পেলে সংকলনটির প্রকাশ অসম্ভব ছিল। 
এই নির্বাচিত গল্প সংকলন প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য শ্রী শংকর মণ্ডলকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।পীযূষ ভট্টাচার্য, বালুরঘাট দক্ষিণ দিনাজপুর
গল্পক্রম:
জঠর – ১
ভাসান – ৮
মাছ – ১৬
কুশপুত্তলিকা – ২১
ক্ষরণ – ২৭
গারসি সংক্রান্তির কাক – ৩৩
দণ্ডকলসের ফুল – ৩৮
পচন প্রক্রিয়া – ৪৫
দহ – ৫২
জ্যোৎস্নালোকে হুইল চেয়ার – ৫৭ [?]
ছোঁয়া বড়শি – ৫৯
কীর্তিমুখ – ৬২
কোরবানী – ৬৯
সীমান্ত শেষের যাত্রী – ৭২ [?]
চক্ষুদান – ৮০
স্বর্ণময়ী – ৮৬ [?]
মধুবনী – ৯৩
বোধনপর্ব – ৯৭
টু টু এখন হালুম বলছে – ১০৭ [?]
পট গাথা – ১১৩ [২০০৩] 

‘নিরক্ষরেখার বাইরে’ যেমন আর পাওয়া সম্ভব নয়। প্রকাশনা সংস্থা ‘প্রমা’ তো আর নেই।

নিরক্ষরেখার বাইরে (১ টি উপন্যাস ও ৩ টি ছোটগল্প),
পৃষ্ঠা : ৬৪,
প্রথম প্রকাশ : কলিকাতা পুস্তকমেলা, জানুয়ারি, ২০০২,
গ্রন্থস্বত্ব : মাধুরী ভট্টাচার্য,
প্রচ্ছদ : বিজয় দত্ত,
প্রকাশক : সুরজিৎ ঘোষ, প্রমা প্রকাশনী, ৫ ওয়েস্ট রেঞ্জ, কলকাতা – ৭০০০১৭,
অক্ষর বিন্যাস : দিব্যেন্দু চৌধুরী, দেবদত্তা এন্টারপ্রাইজেস, এ/৩৮, আতাবাগান গড়িয়া, কলকাতা – ৭০০০৮৪,
মুদ্রক : এ টি এস গ্রাফো লেজার প্রাইভেট লিমিটেড, ১৭ বি লেকভিউ রোড, কলকাতা – ২৯,
প্রচ্ছদ মুদ্রণ : মুদ্রণ,
মূল্য : ৪০ টাকা,
উৎসর্গ : সুজনেষু- /প্রণতি ভট্টাচার্য ও নবারুণ ভট্টাচার্য কে
আখ্যানক্রম :
নিরক্ষরেখার বাইরে – ৭ (উপন্যাস) (২০০১?)
শিবশঙ্করের স্ত্রীর প্রেমের গল্প – ৪৪ (২০০১) (?)
আফাজগাজীর মাদী ঘোড়ার কিস্‌সা অথবা নিমফুলের মধু – ৪৯ (২০০১) 
দলছুট – ৫৭ (২০০২)

এসবের পরে বরেন্দুবাবু ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। ব্যক্তিগত সমস্যাও তাঁর ছিল কিছু। ফলে, বেশ কিছু গল্পের প্রথম প্রকাশের যে সাল বইতে গল্পের শেষে ছাপা হয়েছে সেটুকু উদ্ধার করা বাকি রয়ে গেল। 

শতানীক এর মধ্যে পাঠালেন জলের বর্গক্ষেত্র বইয়ের ডিটেলস। কভারের ছবি পাঠাল সৈকতদা। 

সৈকত চট্টোপাধ্যায়

সদ্যই কেনা, বইটি এখনো পাওয়া যায় ধ্যানবিন্দুতে। বিবলিওগ্রাফির কাজ শুরু হওয়ায় উৎসাহ পেয়েই কিনল সম্ভবত। আমিও খোঁচাচ্ছিলাম বইগুলো পড়ে নিয়ে সাক্ষাৎকারের প্রশ্ন বানানোয় হাত লাগানোর জন্য। 

জলের বর্গক্ষেত্র (গল্প সংকলন), (১৩টি গল্প),
পৃষ্ঠা : ১১৭,
প্রথম প্রকাশ : ডিসেম্বর ২০১৬,
গ্রন্থস্বত্ব : মাধুরী ভট্টাচার্য,
প্রচ্ছদ : অভীক ভট্টাচার্য, 
প্রকাশক : সহজিয়া প্রকাশনী, ৩২/৭, গড়িয়াহাট রোড (দ.), কলকাতা – ৭০০০৩১, যোগাযোগ: ৯১ ৯৮৩৬৮৩৯৬৬৮, ৯০৭৩২৭৬৮৬৯, www.sohojiya.com,
পরিবেশক : দীপ প্রকাশন, অফিস: ২০৯এ, বিধান সরণি, কলকাতা ৭০০০৭৩, বিক্রয়কেন্দ্র: ১৪বি, বঙ্কিম চ্যাটার্জি স্ট্রীট, কলকাতা ৭০০০৭৩,
বর্ণসংস্থাপন : সাইনোস্যুর, ২৬ যোধপুর গার্ডেন, কলকাতা – ৭০০০৪৫,
মুদ্রণ : বর্ণনা, ৬/৭, বিজয়গড়, কলকাতা – ৭০০০৩২,
মূল্য : ১৫০ টাকা,
উৎসর্গ : নন্দিতা ভট্টাচার্য ও অচ্যুত ভট্টাচার্য’র প্রতি,
গল্পক্রম :
প্রতিদ্বন্দ্বিতা – ১ (২০১২)
যে ঘটনা গল্পে থাকে আত্মজীবনীতে নেই – ৬ (২০১১)
ঠান্ডা গোস্তের পরে – ১৬ (২০১২)
কুমড়ো পোকার ঘর গেরস্থলি – ২৮ (২০১৫)
জলের বর্গক্ষেত্র – ৩৭ (২০১৪)
একটি সাঁওতালি কবিতার সরল বঙ্গানুবাদ – ৪৬ (২০১১)
সীমান্ত কিস্‌সা – ৫৫ (২০১৪)
ভোটানের মাঠ – ৬৭ (২০১২)
সঙ – ৭৭ (২০১৪)
উৎসর্গ: ফুলমণিকে – ৮৮ (২০১৪)
চিৎকার – ৯৬ (২০১৪)
কাক মারা জংশন – ১০৩ (২০১৫)
ডিঙা ভাঙা ঘাট – ১০৮ (২০১৪)

শতানীকই জানালেন, এবং পাঠালেন, তৃপ্তি সান্ত্রার লেখা সূর্য যখন মেষ রাশিতে – উপন্যাসটি নিয়ে একটা বড় লেখা। তৃপ্তি সান্ত্রা প্রতিষ্ঠিত লেখিকা, যত্ন নিয়ে লিখেছেন ‘চিন্তা’ পত্রিকার প্রথম সংখ্যায়। পত্রিকা সম্পাদক রাহুল দাশগুপ্তের সাথে আলাপ হয়েছিল সোভিয়েত ব্লগের কাজের সময়। তিনি যে নিজের পত্রিকা শুরু করেছেন জানাই ছিল না। এই অবসরে অবশ্য পুরনো আলাপ ঝালানো হয়নি। নেট এ দেখলাম ‘চিন্তা’ পত্রিকার দ্বিতীয় সংখ্যাও খুবই সুন্দর হয়েছে। 

তৃপ্তি সান্ত্রা – গ্রন্থপাঠ: সূর্য যখন মেষ রাশিতে, ‘চিন্তা’ ১ বর্ষ ১ সংখ্যা, শারদীয় ২০১৯, (সম্পাদক – রাহুল দাশগুপ্ত) পৃ ২৮৫-২৯০

শতানীকের উপদেশে যোগাযোগ করলাম রিপন সরকার-এর সঙ্গে। অপরিসীম সাহায্য করলেন। এমনকি যে বইটি অন্য কারো কাছে পাওয়ায় যাচ্ছিল না, সেটি পীযূষবাবুর বাড়ি গিয়ে নিয়ে এলেন তিনি।

রিপন সরকার

পীযূষবাবুর সাথে প্রায় আত্মীয়ের মতোই সম্পর্ক তাঁর। কলকাতায় চলে আসার সময় পীযূষবাবুর সমস্ত বই এক কপি অন্তত বালুরঘাটে তাঁর কাছে থাকা সুনিশ্চিত করা গেছে বলে জানা গেল। 

শ্রীযুক্তকিশোরীমোহন এবং তার মাদি মোষ (গল্প সংকলন), (১৩ টি গল্প)
পৃষ্ঠা : ১১৪, 
প্রথম প্রকাশ : জানুয়ারি ২০০৯, 
গ্রন্থস্বত্ব : মাধুরী ভট্টাচার্য, 
প্রচ্ছদ : রাজীব চক্রবর্তী, 
প্রকাশক : পার্থশঙ্কর বসু, নয়া উদ্যোগ, ২০৬, বিধান সরণি, কলকাতা ৭০০০০৬, 
মুদ্রণ : সারদা প্রিন্টিং ওয়ার্কস, ৯/সি, শিবনারায়ণ দাস লেন, কলকাতা ৭০০০০৬, 
ISBN : 81-89863-17-7, 
মূল্য : ৯০ টাকা, 
উৎসর্গ : সুভদ্রা গুপ্ত / ও / অমিতাভ গুপ্তের প্রতি, 
নিবেদন : সংকলনের গল্পগুলির উৎসের সূত্র বেশ কিছু ভারতীয় লোককথা আবার বিভিন্ন জনজাতির লোকশ্রুতি থেকে উৎস-সূত্র খুঁজে নেবার চেষ্টাও আছে। লোককথার সূত্র তা কোন প্রদেশের তার উল্লেখ থাকছে কিন্তু লোকশ্রুতির ক্ষেত্রে প্রামাণ্য তথ্যের অভাবে কোনো কিছুরই উল্লেখ করিনি। সবমিলিয়ে পাঠক এই রচনাগুলিকে বর্তমান লেখকেরই গল্প বলে ধরে নিতে পারেন।/ সুহৃদ প্রকাশক পার্থশঙ্কর বসুর নিরন্তর প্রচেষ্টায় বইটি যথাসময়ে প্রকাশ সম্ভব হল। তাঁকে ধন্যবাদ।/ পীযূষ ভট্টাচার্য / বালুরঘাট / দক্ষিণ দিনাজপুর
গল্পক্রম:
চার নম্বর স্বপ্ন অথবা অজানা ফুলের সৌগন্ধ – ১ (২০০৮) 
হাতিপোতা হল্ট – ১১ (২০০৮)
কাপাসতুলোর মুক্তোর বীজ – ২১ [?]
শ্রীযুক্ত কিশোরীমোহন এবং তার মাদি মোষ – ৩০ (২০০৭)
দুঃখিত – ৪০ (২০০৬)
ইস্কাবনের সাহেব – ৪৮ (২০০৫)
অথ সুরম্য টয়লেট কথা – ৫৮ (২০০৮)
অশ্রুত সঙ্গীতের সঙ্গে তাল ঠোকা – ৬৮ (২০০৮)
অনুসন্ধানের প্রথম পাঠ – ৭৪ (২০০৬)
চক্রব্যূহের আকাশ – ৮১ (২০০৮)
যে গল্প পাগলি জানে – ৮৭ (২০০৮)
রিসার্চের বিষয় পালটে যাচ্ছে – ৯৪ (২০০৮)
রণপায়ে দাঁড়িয়ে – ১০৪ (২০০৮)

‘কুশপুত্তলিকা’ বইটি পাওয়া আজ আর কতটা সম্ভব জানিনা। প্রথম গল্পসংকলনের বই পীযূষবাবুর।

কুশপুত্তলিকা (গল্প সংকলন), (দশটি গল্প)
পৃষ্ঠা : ৭৫,
প্রথম প্রকাশ : বইমেলা ১৯৯৫,
গ্রন্থস্বত্ব : মাধুরী ভট্টাচার্য,
প্রচ্ছদ : অপরূপ উকিল, 
প্রকাশক : রক্তকরবী, ১০/২বি, রমানাথ মজুমদার স্ট্রীট, কলকাতা ৭০০০০৯, 
মুদ্রক : শ্যামলকুমার সাউ, দি সরস্বতী প্রিন্টিং ওয়ার্কস, ১ গুরুপ্রসাদ চৌধুরী লেন, কলকাতা – ৭০০০০৬, 
মূল্য : কুড়ি টাকা, 
উৎসর্গ : সোমা ও উমানন্দ-কে,
গল্পক্রম:
কুশপুত্তলিকা – ১ [১৯৯১/২]
ক্ষরণ – ৮
ভাসান – ১৫
বৈতরণী – ২৪ (১৯৯২) (রচনাকাল)
ভগ্নাংশ – ২৯ (১৯৯৩) (রচনাকাল)
অংশুমোহনের আগামী কয়েক বছর – ৩৮
জঠর – ৪৪
দহন – ৫২
চক্ষুদান – ৬০
দণ্ডকলসের ফুল – ৬৮ [১৯৯৪]

‘পীযূষ ভট্টাচার্যের গল্প’ বইটা একেবারেই পাওয়া যাচ্ছিল না কারোর কাছে।

পীযুষ ভট্টাচার্যের গল্প (গল্প সংকলন), (সাতটি গল্প)
পৃষ্ঠা : ৫৬,
প্রথম প্রকাশ : বইমেলা ১৯৯৮,
গ্রন্থস্বত্ব : মাধুরী ভট্টাচার্য,
প্রচ্ছদ : প্রকাশ কর্মকার,
প্রকাশক : প্রদীপ ভট্টাচার্য, রক্তকরবী, ১০/২বি, রমানাথ মজুমদার স্ট্রীট, কলকাতা ৭০০০০৯,
অক্ষর বিন্যাস : ভারতী সাহিত্য প্রকাশনী, ১০/২বি, রমানাথ মজুমদার স্ট্রীট, কলকাতা ৭০০০০৯,
মুদ্রক : সনৎ চৌধুরী, নিও প্রিন্ট, ২০/এ, পটুয়াটোলা লেন, কলকাতা ৭০০০০৯,
মূল্য : ২৫ টাকা,
উৎসর্গ : মাধুরী-কে,
কৃতজ্ঞতা স্বীকার : অশ্রুকুমার সিকদার,
গল্পক্রম:
মাছ – ৭
ছোঁয়া বড়শি – ১৪
বোধনপর্ব – ১৮ 
দহ – ৩১ [১৯৯৫]
গারসি সংক্রান্তির কাক – ৩৮
দোঁহা  – ৪৫ (১৯৯০) (রচনাকাল)
চিরাগ – ৫১ (১৯৯৫)

এর মধ্যে কৌশিকরঞ্জন খাঁ দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ডিটেলসটি পাঠিয়েছেন, ‘কীর্তিমুখ’ বই। 

কীর্তিমুখ (গল্প সংকলন), (১২ টি গল্প),
পৃষ্ঠা : ৮০,
প্রথম প্রকাশ : ২০০১,
গ্রন্থস্বত্ব : মাধুরী ভট্টাচার্য,
প্রচ্ছদ : গণেশ হালুই,
অক্ষর বিন্যাস : রুবি সান্যাল,
মুদ্রণ : নিউ সারদা প্রেস, ৯সি, শিবনারায়ণ দাস লেন, কলকাতা ৭০০০০৬,
প্রকাশক : পার্থশঙ্কর বসু, নয়া উদ্যোগ, ২০৬, বিধান সরণি, কলকাতা ৭০০০০৬,
মূল্য : ৪০ টাকা,
ISBN : 81-85971-78-1,
উৎসর্গ : জুঁই- কে,
গল্পক্রম:
কীর্তিমুখ – ৯ (২০০০)
অলৌকিক পাণ্ডুলিপি – ১৭ (১৯৯৯)
পচন প্রক্রিয়া – ২২ (১৯৯৯)
সিরাজউদ্দৌল্লার পুত্ররা – ২৯ (১৯৯৮)
সিজলি মার্ডির পৃথিবীতে চিতাবাঘ – ৩৭ (১৯৯৮)
রমাকান্তের সরলা উপাখ্যান – ৪২ (১৯৯৬)
তদন্ত সাপেক্ষ একটি কাহিনী – ৫০ (১৯৯৫)
খুনী – ৫৫ (১৯৯৩)
দ্বৈরথ – ৫৯ (১৯৯২)
আত্মরক্ষা – ৬৪ (১৯৮৭)
প্রাগৈতিহাসিকের পর – ৭২ (১৯৮৫)
কোরবানী – ৭৮ (২০০০)

বইয়ের ‘কীর্তিমুখ’ গল্পটা প্রথম প্রকাশিত হয় চতুরঙ্গ ৬০ বর্ষ ১ সংখ্যা, বৈশাখ-আষাঢ় ১৪০৭, (আগস্ট ২০০০) সংখ্যায়। হাইডেলবার্গ ইন্সটিটিউটের সহায়তায় সেন্টার ফর স্টাডিজ অফ স্যোসাল সায়েন্সেস যে বিশাল সংখ্যায় লিটিল ম্যাগাজিন ডিজিটাইজ করে আর্কাইভ করেছে ক্রসএশিয়া প্ল্যাটফর্মে সেখানেই পড়তে পারবেন এটি। 

বর্তমানে আত্মজৈবনিক উপন্যাস “অন্তেবাসী” তিনি ধারাবাহিকভাবে লিখছেন ‘চারনম্বর প্ল্যাটফর্ম’ ওয়েবজিন-এ। এখনো অবধি প্রকাশিত হয়েছে ১৯ টি পর্ব। 

আরেকটি উপন্যাস রচনার কাজও চলছে। নাম – ‘উৎসর্গের উপকথা’। একে তিনি বলছেন রিভার্স মনসামঙ্গল। নিঃসন্দেহে খুবই আকর্ষক কাজ হতে চলেছে এটিও। ‘একালের রক্তকরবী’ তে প্রকাশিত বড়গল্প ‘উৎসর্গের উপকথা’ ও ‘মধ্যবর্তী’ পত্রিকায় প্রকাশিত ‘শূন্য ডিঙার নাম শঙ্খচূড়’ কে একত্রে গেঁথে অবশ্যই আরো বিশদে গ্রহণ বর্জন পুনর্লিখনের মাধ্যমে এই সৃজনের কাজ চলছে। সমস্যা হল এই লেখার জন্য যে বিপুল পড়াশোনা করা প্রয়োজন, শিফটিং এর জন্য প্যাকিং-এ ঢুকে থাকায় সেই বইপত্র পড়া দুষ্কর হয়েছে। ফলে উপন্যাসটি লেখার কাজ আপাতত স্থগিত রয়েছে।

‘গল্পবিশ্ব’ ও ‘উত্তরভাষা’র পরে সমীর চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত ‘তমসুক’ নামক একটি পত্রিকা পীযূষ ভট্টাচার্য ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে। শতানীক এ তথ্য জানান এবং নিজের কপি থেকে পুরোটাই ছবি তুলে পাঠান পড়ার জন্য। তার আগেই রিপনবাবুও পাঠিয়েছেন এই পত্রিকার প্রচ্ছদ ও সূচীপত্র।

তমসুক (সম্পাদক সমীর চট্টোপাধ্যায়) আশ্বিন ১৪২৬/অক্টোবর ২০১৯, ৩৩-৩৬ বর্ষ ৩৮ সংখ্যা, ক্রোড়পত্র – পীযুষ ভট্টাচার্য
অর্ণব সেন – পীযুষ ভট্টাচার্যের গল্পে বহুমাত্রিকতা – ১১৭-১২২
পঞ্চানন মণ্ডল – পীযুষ ভট্টাচার্যের গল্পে জীবন পাঠ : কবিতার আখরে লেখা – ১২৩-১৩৫
রূপদত্তা রায় – পীযুষ ভট্টাচার্যের কীর্তিমুখ : সাধারণ পাঠকের দৃষ্টিতে – ১৩৬-১৪৭ 
নবনীতা সান্যাল – মনস্তত্ত্ব, উত্তর আধুনিকতা এবং পীযূষ ভট্টাচার্যের ছোটগল্প – ১৪৮-১৫৪
রঞ্জন রায় – পীযুষ ভট্টাচার্যের গল্প : সময়ের ‘দহ’ – ১৫৫-১৬১
প্রলয় নাগ – পীযুষ ভট্টাচার্যের ‘তালপাতার ঠাকুমা’ : এক আখ্যানের সহস্র গতিপথ – ১৬২-১৬৬
সোমনাথ ভট্টাচার্য – পীযূষ ভট্টাচার্য :মিথের জাদুকর – ১৬৭-১৭৪
পীযূষ ভট্টাচার্য : জীবনপঞ্জি ও গ্রন্থপঞ্জি ১৭৫-১৭৬

সমীর চট্টোপাধ্যায়ের সাথেও কথা হল। তাঁর বয়স আশির কোঠায়। তিনিও স্ত্রীর সাথে একলাই থাকেন দুজনে। জানালেন পত্রিকা সমস্ত কপিই রঞ্জন রায়-এর কাছে রাখা আছে। পোস্ট করে পাঠানোও সম্ভব নয় তাঁর পক্ষে। আশা করি রঞ্জনবাবুর সাথে যোগাযোগ করে পত্রিকাটির হার্ড কপি পাওয়া যাবে। শুনলাম ক্রোড়পত্রের সাথে আর কিছু লেখা জুড়ে ওটিকে সম্পূর্ণ বই করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। সেটিই বরেন্দুবাবু কথিত বই কিনা নিশ্চিত হতে পারিনি এখনো। রিপনবাবু আরো পাঠালেন, উত্তরভাষায় ২০১৩ সালে প্রকাশিত একটি সাক্ষাৎকার।

আলাপচারীতায় পীযূষ ভট্টাচার্য ‘আমি রুট্‌সে বিশ্বাস করি। আমি ভুঁইফোর নই – রিপন সরকার [উত্তরভাষা মে ২০১৩ কৌশিকরঞ্জন খাঁ ও রক্তিম সাহা সম্পাদিত পৃ ৩১-৩৮]

বাদবাকি সাক্ষাৎকার বিষয়ে যেটুকু জেনেছি, প্রথমটি প্রকাশিত হয়েছিল ‘অশোকবন’ পত্রিকায়। ‘রূপান্তরের পথে’ নামক শুভ্র মৈত্র সম্পাদিত মালদা থেকে প্রকাশিত একটি সাপ্তাহিক পত্রিকাতেও বেরিয়েছিল একটি কথোপকথন। ‘নান্দনিক’ নামক দীপক কর সম্পাদিত গোকুলপুর, কাটাগঞ্জ, নদীয়া থেকে ‘নান্দনিক সাহিত্য সংসদ’ এর মুখপত্র একটি পত্রিকাতে সাম্প্রতিকতম সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হতে চলেছে, প্রায় ৪৫ পাতা জুড়ে। একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হওয়ার কথা ছিল জলপাইগুড়ির  ‘দ্যোতনা’ পত্রিকায়, যার সম্পাদক গৌতম গুহরায়। সেটির দুটি অংশ, একটি – প্রশ্নের হাতে লিখিত উত্তর ও অন্যটি – প্রশ্নোত্তরের অডিও থেকে হাতের লেখায় ট্রান্সক্রিপ্ট করা। সে হাতের লেখার পাঠোদ্ধার করে বর্তমানে কম্পোজ করা চলছে। অডিও রেকর্ডিং টি সম্ভবত অলভ্য বর্তমানে। এই সবগুলি না পড়ে নতুন প্রশ্ন তৈরি করা সম্ভব নয়, উচিত তো নয়ই। অপেক্ষাই করছি সমস্ত পড়তে পাওয়ার। 

রিপন সরকার নিজে ‘সূর্য যখন মেষ রাশিতে’ উপন্যাস বিষয়ে আলোচনা করেছিলেন উত্তরভাষা পত্রিকায়। সেটিও পাঠালেন। 

দেশ ভাগ ভয়ের সংস্কৃতি ও পীযূষ ভট্টাচার্যের সূর্য যখন মেষ রাশিতে – রিপন সরকার – (উত্তরভাষা ৭ বর্ষ ২ সংখ্যা, পৌষ ১৪২১, ডিসেম্বর ২০১৪) পৃ ৯-১৩

উপরি পাওয়া গেল পীযূষবাবুর গদ্য নবারুণ ভট্টাচার্যকে নিয়ে, যা ঐ সংখ্যাতেই প্রকাশিত হয়েছিল।

হে সখা – চিরসখা (উত্তরভাষা, ৭ বর্ষ ২ সংখ্যা, পৌষ ১৪২১, ডিসেম্বর ২০১৪)

শতানীকের পোস্টের কমেন্ট থেকে পরিচিতি হয়েছিল পুরুষোত্তম সিংহ-র সাথে।

পুরুষোত্তম সিংহ

তিনটি প্রবন্ধ লিখেছেন তিনি পীযূষবাবুর সাহিত্য নিয়ে। দুটি ইন্টারনেটে প্রাপ্য, ‘চৌকাঠ’ ও ‘শব্দের মিছিল’ ওয়েবজিন-এ প্রকাশিত হয়েছিল।

পুরুষোত্তম সিংহ – উপকথার আড়াল থেকে উঁকি দেওয়া রাষ্ট্রের জন্মবৃত্তান্ত (আলোচনা – নিরুদ্দেশের উপকথা) – শারদ চৌকাঠ, ১৫ আগস্ট ২০২০

পুরুষোত্তম সিংহ – ঠাকুমার জাদুগিরি, জাদুগিরির ঠাকুমা (আলোচনা – তালপাতার ঠাকুমা) – শব্দের মিছিল সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২০

আরেকটি লেখা সরাসরি বইতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, যদিও সেটাতে অন্য আলোচনার মধ্যে স্বল্প পরিসরে পীযূষবাবুর উল্লেখ হয়েছে।

পুরুষোত্তম সিংহ – “বিন্দুতে সিন্ধু দর্শন” (পীযূষ ভট্টাচার্যের গল্প পৃ ১০৭-১০৮) (গ্রন্থ: উত্তরবঙ্গের কথাসাহিত্য, সোপান, ২০১৮)

অন্য একটি অ্যাকাডেমিক আলোচনা গ্রন্থভুক্ত, দেখার সুযোগ হয়নি – “কুহক বাস্তবতা ও ‘তালপাতার ঠাকুমা’ (২০১২) : একটি পর্যালোচনা” – দেবস্মিতা শীট (গ্রন্থ : বাংলা উপন্যাসের দিক্‌ দিগন্ত – সম্পা: বিকাশ রায়, ইয়াসমিন বিশ্বাস, প্রকাশনা – সংবেদন) পৃ ৭২৯-৭৩৭

এ বাদে, নীলাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ‘তালপাতার ঠাকুমা’ পুস্তক পরিচয় ছাপা হয়েছিল আফিফ ফুয়াদ সম্পাদিত ‘দিবারাত্রির কাব্য’ পত্রিকায়। আরো অনেক আলোচনাই নিশ্চয়ই নানা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। ধীরে ধীরে জানা যাবে সেসমস্ত।

পীযুষ ভট্টাচার্যের যে সমস্ত গল্প যে বিভিন্ন গল্প সংকলনের অন্তর্ভুত হয়েছে, তার অন্তত দুটি হল –

  1. বোধনপর্ব (উত্তরায়ণ, উত্তরবঙ্গবাসী লেখকদের গল্প সংকলন, বইমেলা ২০০৬, সম্পা: আলোক গোস্বামী, ISBN – 81-7332-486-4, পুনশ্চ) 
  2. তদন্ত সাপেক্ষ একটি কাহিনী (নকশাল আন্দোলনের গল্প, সম্পা: বিজিত ঘোষ, জানু ২০০৮ দ্বিতীয় সংস্করণ, ISBN – 81-7332-258-6, পুনশ্চ)

শ্রীধর মুখোপাধ্যায় কিছু গল্পের অনুবাদ করেছেন ইংরিজিতে, ‘Instilling Life and Other Stories’ নামে সেই অনুবাদ প্রকাশের অপেক্ষায়। ‘তালপাতার ঠাকুমা’-র ইংরিজি অনুবাদও চলছে শুনেছি। অনুবাদক মহিলার সাথে বর্তমানে প্রায়শই আলোচনা চলে পীযূষবাবুর, এই অনুবাদের গঠনপর্বে। প্রবন্ধগুলিও গ্রন্থবদ্ধ হতে চলেছে। সব প্রবন্ধের তালিকা করতে পারিনি, ফেব্রুয়ারিতে উনি কলকাতায় আসতে আসতে সেগুলি কম্পোজ হয়ে যাবে বলেই শুনলাম। যেটুকু জানা গেছে তার নোট রইল

খণ্ডাংশ জীবন – উত্তরভাষা এপ্রিল ২০১৫
আমার দেবেশ রায় - চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম জুন ১, ২০২০ 
আত্রেয়ীর তীর ধরে ফেরা বাচকের ভূমিকায় – (? , কলাম: ভূমিপুত্র, ছবি সন্দীপ পাল) পুনঃপ্রকাশ - উত্তরভাষা ৯ বর্ষ ২ সংখ্যা, শীত সংখ্যা ডিসেম্বর ২০১৬ (১৪২৩)
যদু মধু ফালটুসের কথা অকথা প্রসঙ্গে কিছু কথাবার্তা – (বইপড়া – যদু মধুর জার্নাল – মধুময় পাল – নয়া উদ্যোগ) – [ভাষাবন্ধন ২০০৮ জুলাই, পৃ ৫৪-৫৫]
অমিয়ভূষণের ট্রমা প্রসঙ্গে রমাপ্রসাদ নাগ এবং কিছু স্বগোতোক্তি – (বইপড়া – অমিয়ভূষণ ট্রমা চিহ্নিত এপিক – রমাপ্রসাদ নাগ – ভাষাবন্ধন) – [ভাষাবন্ধন ২০০৯ জানু-ফেব্রু পৃ ৬৬-৬৮]
হে সখা – চিরসখা (উত্তরভাষা, ৭ বর্ষ ২ সংখ্যা, পৌষ ১৪২১, ডিসেম্বর ২০১৪) 
জল যাই জল আসি (গ্রন্থ আলোচনা, দিবারাত্রির কাব্য জানুয়ারি-মার্চ ও এপ্রিল-জুন ২০১০)
নবারুণ ভট্টাচার্য কে নিয়ে আরো একটি লেখা
এশিয়াটিক সোসাইটি – পল্লব সেনগুপ্তর কাছে খোঁজ নিতে হবে
সুধীর চক্রবর্তী কে নিয়ে লেখা
রাঘব বন্দ্যোপাধ্যায় কে নিয়ে ২ টি লেখা
অক্ষরেখা মহাশ্বেতা দেবী সংখ্যায় লেখা
জগদীশ গুপ্ত কে নিয়ে অল্প বয়সে লেখা
সাহিত্য অ্যাকাদেমীতে লেখা
সারামাগো-কে নিয়ে লেখা
মার্কেজ-কে নিয়ে লেখা
মাসিক কবিতাপত্র / এবং বিকল্প পত্রিকায় লেখা – সম্পাদক – রাজীব সিনহা
আশাপূর্ণা দেবীর গৃহস্থালীর নারীবাদী ন্যারেশন বিষয়ে লেখা
রবিশংকর বল এর ৫-৭ টা উপন্যাস নিয়ে লেখা
তেভাগা আন্দোলন বিষয়ে লেখা প্রতিলিপিতে
’৫০ এর মন্বন্তর বিষয়ে লেখা
ইংরিজিতে UGC লেকচার – International History Conference
ইংরিজিতে Mythical approach of History of Literature (World Bengal Literature Summit – Oxford / University of Calcutta)

তৃতীয় পরিসর-এর বরেন্দু মন্ডলের সম্পাদনায় ৫০টি গল্পের পাশেই রাজীব চৌধুরীর সম্পাদনায় শ্রেষ্ঠ গল্প-এর কাজও চলছে, সেটাও সম্ভবত ৫০ টি মতো গল্পই হবে। শীঘ্রই প্রকাশের পরিকল্পনা শুনলাম। এছাড়া অগ্রন্থিত প্রচুর গল্প তো রয়েছেই। যেটুকু জানা গেছে তার নোট রইল। অগ্রন্থিত গল্পগুলিও একটি বই হিসেবে প্রকাশিত হতে চলেছে বলেই জানা গেল।

 খরা (প্রতিলিপি)
 শেষ রাতে ট্রেন (প্রতিলিপি) 
 পদস্খলন (?)
 বংশধর (অন্যদিন)
 ব্যাধি (অন্যদিন) 
 বানপ্রন্থের মহাবিষুব (অন্যদিন)
 উদ্ধারপর্ব (অন্যদিন)
 শশধর জাগুয়া (অন্যদিন) 
 কালুয়ার কাল্লু (সাতরঙ)  
 প্রতিপক্ষ (বালুরঘাট বার্তা) 
 গবেষণা (অনুসন্ধানী চোখ)
 অনন্ত কাহিনী (মধুপর্ণী)
 নদীর বন্যা (জনরোল) 
 সক্ষেপে করুণাময় (অশোকবন) 
 সনাক্তকরণ (বর্তিকা / নন্দন) 
 ভাঙা শিলালিপি (উত্তরবঙ্গ সংবাদ)
 দোনলা বন্দুক (দৈনিক বসুমতি) 
 অসুখ (আকাল) 
 চল মিনি (প্রতিদিন)
 নির্ধারিত দেড় মাস (প্রতিদিন) চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম (২ বর্ষ ৩ যাত্রা, জুলাই ১, ২০১৮)
 বাতিল কর্মসূচি (অভিযেক) 
 বৃষ্টির রূপকথা (কালি ও কলম) 
 মধ্যদিন মধ্যরাত (একালের রক্তকরবী) 
 সাফাই অভিযান (?) 
 ভালোবাসার রঙ নীল: ভালোবাসার রঙ গোলাপি ? (অনুষ্টুপ) 
 লুপ্ত পাঠ কিংবা নিরুদ্দেশের উপকথা – (ভাষাবন্ধন)
 কাপাসতুলোর মুক্তোর বীজ – দিবারাত্রির কাব্য
 কোনো এক বিষ্যুৎবারের গল্প – (ভাষাবন্ধন)
 মাঝি গ্যালিভার ও অন্যান্য লিলিপুট (কথক) 
 জার্সি গরুর রচনা – (উত্তরভাষা), চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম (১ বর্ষ ৮ যাত্রা, ডিসেম্বর ১, ২০১৭)
 তালগাছ একপায়ে দাঁড়িয়ে – (খোয়াব ওয়েবজিন)
 একটি রহস্য গল্প – (মল্লার) 

রচনাপঞ্জি ও চর্চাপঞ্জি তৈরির সঙ্গে বাধ্যতই চলছে পত্রিকা প্রকাশের তথ্য খোঁজা। পীযূষবাবু নিজে যতদূর সম্ভব সাহায্য করেছেন। এছাড়াও সাহায্য পেলাম আরো অনেকের থেকে, যেমন – সৌম্যেন পাল পাঠালেন অনুষ্টুপে প্রকাশিত গল্পের তথ্য, সদ্য পি এইচ ডি পেপার সাবমিট করা প্রত্যুষ পাল জানালো অমৃতলোক-এ প্রকাশিত একটি গল্পের কথা, একালের রক্তকরবীতে প্রকাশিত একটি গল্পের নাম জানালেন শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়, আরেকটির বিকাশ গণ চৌধুরি। বাকি নিজের সংগ্রহের পত্রিকা, নেট ঘেঁটেঘুটে যা পাওয়া গেল কুড়িয়ে বাড়িয়ে তা দিয়ে একরকম তৈরি হল, হয়ে চলেছে তথ্যপঞ্জী। আরো বহু লেখার খোঁজ পাওয়া বাকি। স্বতন্ত্রভাবে এ কাজ এগোতে বেশ কিছু পত্রিকার ফাইল কপি আর্কাইভ ধরে খোঁজা দরকার যেমন, অমল বসু সম্পাদিত ‘প্রতিলিপি’, প্রদীপ ভট্টাচার্য সম্পাদিত ‘একালের রক্তকরবী’, শতদল মিত্র সম্পাদিত ‘কথক’, অজিতেশ ভট্টাচার্য সম্পাদিত ‘মধুপর্ণী’, সুরজিৎ ঘোষ সম্পাদিত ‘প্রমা’, নবারুণ ভট্টাচার্য সম্পাদিত ‘ভাষাবন্ধন’, বিশ্বরূপ দে সরকার সম্পাদিত ‘মধ্যবর্তী’, শুভময় সরকার সম্পাদিত ‘মল্লার’, এমনকি ‘নন্দন’, ‘বসুমতী’, ‘আজকাল’, ‘প্রতিদিন’ ইত্যাদি বেশ কিছু পত্রিকা। কয়েকটিতে যোগাযোগ করা গেছে, কেউ কেউ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন খুঁজে দেখার, কোনো ক্ষেত্রে সম্পাদকের প্রয়াণ, প্রকাশনার বিলুপ্তি, আর্কাইভ-এর অভাব তথ্যপ্রাপ্তির অসম্ভাব্যতার ইঙ্গিতই দিয়েছে। আফিফ ফুয়াদ তাঁর সম্পাদিত ‘দিবারাত্রির কাব্য’ তিন দশকের সব সংখ্যা খুঁজে তালিকা দিয়েছেন। আবার অমল বসু জানিয়েছেন ১৯৯৫ এর বন্যায় তাঁর পত্রিকা সমস্ত ভেসে গেছে। পরে বন্ধুরা গোটা চারেক সংখ্যা দিয়ে গেছিল, সেকটিই রয়েছে। অজিতেশ ভট্টাচার্য মারা যাওয়ার পর তাঁর সমস্ত পত্রিকা বালুরঘাট কলেজে দান করা হয়েছে। আশার কথা পীযূষবাবু, তাঁকে পাঠানো তথ্যপঞ্জিতে, নিজেই প্রথম প্রকাশের মিসিং তথ্যাদি যতদূর সম্ভব ভরাট করে দেবেন বলে জানিয়েছেন। তবে কিছু গল্প বেশ কিছু পত্রিকায় একাধিকবার প্রকাশ পেয়েছে। কখনো সে তথ্য ওঁকে জানানো হয়েছে, কখনো অনুমতিটুকুও না নিয়ে, এমনকি প্রকাশের তথ্যও না জানিয়ে শুধুমাত্র যে পত্রিকা থেকে গল্পটি নেওয়া, তাকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে লেখা পুনঃপ্রকাশিত হয়েছে। ফলতঃ, সেরকম প্রকাশের কিছু তথ্য তাঁর কাছেও নেই। আশা করি নিয়মিত দেখা করা গেলে আর তাঁর লেখার ফাইলপত্র ঘাঁটতে পারলে তথ্যপঞ্জি সম্পূর্ণ করতে পারব বর্ষীয়ান লেখকের চোখের উপর অত্যাচার না করেই। মনে করি, তাঁর মাপের লেখকের সমস্ত রচনাই মলাটবদ্ধ থাকা উচিত সহজলভ্য পাঠসম্ভাব্যতায়। এবং চাইব, সমস্ত লেখার প্রথম প্রকাশ, সমস্ত একক গ্রন্থগুলি স্ক্যান করে আর্কাইভ হিসেবেও থাকুক ভবিষ্যৎ গবেষনার সুবিধার্থে।

পাঠক নিশ্চয় লক্ষ করেছেন, এই গদ্যে একটি বাক্যও ব্যয় হয়নি লেখকের লেখার বৈশিষ্ট বর্ণনায় বা অসাধারণত্ব বিশ্লেষনে। সহজ কারণ, আরো অনেকেই সেকাজ করেছেন। তাদের লেখাগুলি পড়ার সুযোগ করে দেওয়াই বেশি জরুরী মনে করেছি। নিজে সমস্ত লেখা পড়ে উঠলে একদিন হয়তো সামগ্রিকভাবে এবং প্রতিটি একক রচনা বিষয়ে বিস্তৃত আলোচনা করার চেষ্টা করব, কিন্তু মনে করছি সেটা এখুনি ততটা জরুরী নয়। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক-ছাত্র শিক্ষকরা সেকাজে রত হয়েছেন। আগামীতে পাঠক হিসেবে নানা সন্দর্ভ আমরা পেতে শুরু করব। তার কিছু অ্যাকাডেমিক রেফারেন্স কন্টকিত বোরিং হতে পারে, আবার, কিছু হতেই পারে মেধা মনন ও যুক্তিবিন্যাসে নতুন দিগদর্শনে অপূর্ব আকর্ষক।

শুরুতে যেমন বলেছিলাম, এ লেখা গন্তব্যে পৌঁছয়নি এখনো। পাঠককেও তাই কোথাও পৌঁছে দেওয়ার দায় নেই এর। ইতিমধ্যে যদি হাইপারলিংক করা লেখাগুলি পড়তে পড়তে পীযূষ ভট্টাচার্যের লেখা পছন্দ করতে শুরু করে থাকেন আর সমস্ত লেখা খুঁজে পেতে পড়ে ফেলা মনস্থ করেন, তবে হে সুধী পাঠক, আপনিও চলতে শুরু করেছেন সে পথে, খুব কম মানুষই যার যাত্রী। দেখা হবে আবার কোথাও অন্য কোনো দিন, পথের পাশেই অথবা গন্তব্যে।

[ইতিমধ্যে আংশিক সম্পূর্ণ হওয়া রচনাপঞ্জি ও চর্চাপঞ্জি পাঠিয়েছি বরেন্দু মন্ডলকে। পীযূষ ভট্টাচার্যকে তাঁর জন্মদিনে উপহার হিসেবেই পাঠিয়েছি তথ্যপঞ্জির যথাসম্ভব শেষ আপডেট। তা সঙ্গে সঙ্গে পৌঁছে গেছে এম. ফিল. রত গবেষকদের গাইডদের কাছে। আরো খানিক এগোনো অবস্থায়, পঞ্জিটিকে এখানেও রাখলাম পরিমার্জনা চলতে থাকা গুগুলডক হিসেবে, সারা পৃথিবীর বাংলা ভাষাভাষী মানুষই যাতে তা পড়তে পারেন। হয়তো কারো অ্যাকাডেমিক পেপারের অংশ হয়েই ঢুকে যাবে এই কাজটুকু, এমনকি হয়তো স্বীকৃতিবিহীন ভাবেই। তবু, বাংলাভাষার একজন সাধারণ পাঠকেরও যদি কাজে লাগে এ লেখা, সেই ভরসায় সকলের ওপেন অ্যক্সেসের জন্য রইল আমার মাস দুয়েকের পরিশ্রমটুকু, এখনও পর্যন্ত সাহায্য যাঁরা করেছেন, এ লেখায় তাঁদের প্রত্যেকের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও তাঁদের অবদানের স্বীকৃতিসহ। গন্তব্যে পৌঁছনো পর্যন্ত, অর্থাৎ বিবলিওগ্রাফির কাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত, গুগুলডকটি আপডেট হতেই থাকবে। মানে, ধরে নেওয়া যেতেই পারে লেখাটা এখানেই পুরোপুরি শেষ হয়ে যাচ্ছে না, তাই, প্রিয় পাঠক, এই লেখাটা ‘পুরোপুরি’ খুব চট করে পড়ে ফেলা যাবে না।]

[এই লেখা এবং এতে ব্যবহৃত ও উল্লিখিত সমস্ত রচনাই তাদের লেখক, প্রকাশক বা সম্পাদকের কপিরাইটভুক্ত। ভারত ও আন্তর্জাতিক কপিরাইট আইন অনুযায়ী এগুলির সত্ত্ব সংরক্ষিত। এখানে সেগুলির উল্লেখ বা নিদর্শন কেবলমাত্র পাঠকের ব্যক্তিগত পাঠ ও পীযূষ ভট্টাচার্যের লেখালেখি নিয়ে চর্চা, চর্যা ও প্রসারের স্বার্থে। কোনো বাণিজ্যিক স্বার্থে এগুলির ব্যবহার অভিপ্রেত নয়। সংশ্লিষ্ট লেখক ও পত্রিকা সম্পাদক আমাদের সকলের কৃতজ্ঞতাভাজন।]

Facebook Comments