Site Overlay

শখ

নীলাব্জ অপার কথাগুলো ঠিক বিশ্বাস করে উঠতে পারছিল না।বেশ কিছুদিন ধরেই তার সাথে অপার এই বিষয়টা নিয়ে কথা হচ্ছে।আজ একেবারে মুখোমুখি।এবং কফি,পকোড়া ফেলে নীল গোগ্রাসে অপার কথাগুলো শুনছিল।অপাও একদমে সবটা শেষ করে বললো,”তুই সত্যিই জানতিস না রুশার এই স্বভাবের কথা ?”

নীল,”আরে জানলে কি আর ওর সাথে তাজপুর যেতাম ?”

অপা এবার কফিতে চুমুক দিয়ে বলে,রুশা তো ক্লাস সেভেন থেকেই এভাবে চালাচ্ছে ! ওর যাবতীয় দামী দামী কসমেটিকস, পারফিউম সব ওর প্রাক্তনদের দেওয়া”

নীল মাথাটা ডান দিক,বাঁ দিক করে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো।

অপা এবার একটু মজা করে বললো,”তা,তুই কি দিলি ? “

নীল হালকা রেগে বললো,” আর কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দিস্ না অপা”

“বুঝলাম, নিজেকে দিয়ে ফেলেছিস আর তাই এতোদিন ধরে আপসেট” অপা হেসে ওঠে।”সত্যি নীল,তুই না একটা কর্পোরেট চাকুরে ? এতো লোক চরাস অথচ রুশাকে চিনতেই পারলি না ? একেবারে বাইকে বসিয়ে নিয়ে সোজা তাজপুরের হোটেলের বিছানায় নিয়ে গিয়ে তুললি ?”

নীল,” দ্যাখ ভাই,কাবেরীর সাথে সেপারেশনের পর থেকে ফাঁকা ফাঁকা লাগতো।তারপর ওই স্কুল গ্রুপে রুশার সাথে আলাপ।মেয়েটা এতো সেনসিটিভ,যে প্রেমে পড়াটা অপরাধ নয় বল ?”

অপা পকোড়ায় কামড় দিয়ে বললো,”নয়তো, কিন্তু প্রেমে পড়ে ধেড়িয়ে কোঁকানোটা unhealthy!”

নীল,”আমি কি করে জানবো যে রুশা এভাবে ওর শখ মেটায় ? “

“কি করে জানবি মানে ? রুশার চোখ দুটো দেখিসনি ? চাউনি দেখেও বুঝলি না যে ওর ক্ষিদেটা ! সত্যি তোরা ছেলেরা পারিসও বাবা ! কাজল পরে মেয়েরা বড়ো বড়ো করে তাকালেই তোরা flat !”

অপার বকুনিতে নীলাব্জ চুপ করে থাকে।সত্যিই সে রুশাকে ভালোবেসেছে।শরীর, মন সবটা দিয়েই।কিন্তু রুশা যে এভাবে শখ মিটিয়ে পালাবে তা স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি।

কফিশপের বিল মিটিয়ে অপার সাথে হাঁটতে হাঁটতে নীলাব্জের মনে হলো কতো বিচিত্র মানুষের শখ,আর কতো বিচিত্র উপায়ে তা মানুষ মেটায় ! ভালোবাসার অভিনয় করতেও পিছুপা হয় না ! 

অপাকে একটা ট্যাক্সিতে তুলে দিয়ে নীল সিগারেট ধরাতে ধরাতে মোবাইল খুলে তার আর রুশার একসাথে তোলা ছবিগুলো মুছতে আরম্ভ করলো…

Facebook Comments