Site Overlay

স্বপ্ন দেখে মন

রূপা চক্রবর্তী

‘স্বপন যদি মধুর এমন

হোক সে মিছে কল্পনা

জাগিও না, আমায় জাগিও না

আমায় জাগিও না…’।

আমি স্বপ্ন দেখতে খুব ভালবাসি। সেটা অবশ্য কমবেশি সবাই ভালোবাসে। তাই আমি ঘুমিয়ে থাকলে খুব প্রয়োজন না হলে, কেউ আমাকে জাগিয়ে দেয় না। অর্থাৎ পারতপক্ষে আমার স্বপ্ন দেখার ব্যাঘাত সষ্টি করে না। স্বপ্ন দেখা এবং স্বপ্ন বাস্তবায়িত করার জন্য কি কি করা উচিত সেই গুরুগম্ভীর তাত্ত্বিক আলোচনার মধ্যে আমি মোটেই যাচ্ছি না। কিংবা জেগে স্বপ্ন দেখাও আমার আজকের লেখার বিষয় নয়। গভীর ভাবে ঘুমিয়ে সুন্দর সুন্দর স্বপ্ন দেখার পরিধি মানুষের কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে আমি সেটাই বলতে চাইছি। অর্থাৎ সেই ক্লিশে কথাটা এসেই পড়ে ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে রাজপ্রাসাদের স্বপ্ন দেখা। এতটা নাটকীয় না হলেও আমার মত স্বপ্নগুলোর মধ্যে নাট্যরসের আভাব বিন্দুমাত্র পরিলক্ষিত হয় না। অবশ্যই এটা আমার মত এবং আমার দেখা স্বপ্ন। কারণ রাম-শ্যাম-যদু-মধু কি স্বপ্ন দেখে, আমি তো তা বলতে পারব না। কারণ আমি টেলিপ্যাথি জানি না, যে অন্যের মনের অতল গহনে ডুব দিয়ে স্বপ্নের মণিমাণিক্যখুজে আনব। আমি শুধুমাত্র আমার কিছু রমণীয় স্বপ্ন সবার সথে ভাগ করে নিতে চাই যেগুলো আমি কোনদিনও বিস্মৃত হব না বা যেই স্বপ্নগুলো জাবর কাটতে গিয়ে আমি কোনদিনও ক্লান্ত হবো না বরং স্বপ্নের সাথে অভিসারে জারিত হব। অক্লান্তভাবে অবচেতন মনে সুপ্ত থেকে যা আমার দৈনন্দিন জীবনের মানসিকতায় ব্যাপ্ত হয়।

আমার ভীষণ প্রিয় রম্য স্বপ্নটা দেখা ১৯৮৯ সালে। যে বছর স্ট্রেফিগ্রাফ এবং বরিস বেকার দু-জন জার্মান একসাথে ফ্রেঞ্চ ওপেনে গ্লান্ড স্লাম চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল, স্ট্রেফিগ্রাফের অন্ধভক্ত আমি। তাই আমার জার্মান প্রীতি চিরদিনই একটু বেশি। সেই সুবাদে আমি সব সময়ই ‘নিভিয়া’র প্রোডাক্টই ব্যবহার করে এসেছি। কারণ আমার অবচেতন মনে শতাব্দীর সেরা খেলোয়াড় স্ট্রেফিগ্রাফের মত ‘নিভিয়া’ই সেরা কসমেটিক্স হয়ে আছে। আর স্ট্রেফির অ্যাড দেওয়া অ্যাডিডাস নিয়ে তো কোন কথাই হবে না, ত সেই বছর উইম্বলডন-এর ফাইনাল ছিল স্ট্রেফিগ্রাফের সাথে জেনিফার কাপ্রিয়াতির। আমি তো অতি উৎসাহ নিয়ে রাত দুটো অবধি জেগে বসে আছি, খেলা দেখব বলে, আমার প্রিয় সাদা স্কার্ট পরে। কারণ ওটা আমার লাকি ড্রেস স্ট্রেফি গ্রাফকে অনুকরণ করে কেনা। ওটা পরলে সব সময় স্ট্রেফি গ্রাফ জেতে। খেলা শুরু হল । স্ট্রেফি-কে দেখে যারপর নাই পুলকিত আমি যেই গুছিয়ে বসব ভাবছি- তখনই স্ট্রেফির একটা ;আনফর্সড এরর’ আর সঙ্গে সঙ্গে ‘স্যাটেলাইট ডিলিঙ্ক’। ব্যাস খেলা দেখা মাথায় উঠল। কি পরিমাণ রাগ এবং বিরক্তির কারণ হল, টেলিভিশনের অন্ধকার স্ক্রিনের ওপর সাদা লেখাটা সেটা আমি বলে বোঝাতে পারব না। কারণ ভুক্তভোগী মাত্রই সেটা জানেন। কিন্তু এরপরে যেটা ঘটল, সেটা সচরাচর হয় না। অপেক্ষা করতে করতে আমি কখন যেন উইম্বলডনের সেন্ট্রাল কোর্টে পৌঁছে গেলাম এবং ইংল্যান্ডের রয়্যাল ফ্যামিলির সাথে প্রথম সারিতে বসে খেলা উপভোগ করতে লা্লাম। মনে মনে চমকিত হলাম আমার এতদিনের স্বপ্ন সেন্ট্রাল কোর্টে বসে উইম্বলডন দেখা, সেটা এত তাড়াতাড়ি ফলে যাওয়া দেখে। কিন্তু চমক ভাঙতে সময় লাগল না। কারণ স্ট্রেফি একের পর এক তার স্বভাব বিরুদ্ধভাবে ভুল করতে থাকায় কাপ্রিয়াতি পয়েন্ট পেতে থাকল। স্ট্রেফির সেই জোরালো ফোরহ্যান্ড কোথায় গেল? এস গুলোও যেন ঠিকঠাক হচ্ছে না। খেলা প্রথম সেট গড়াতে কাপ্রিয়াতির পক্ষে ফলাফল ৬-৪ দ্বিতীয় সেটেও একই অবস্থা। যে যার সার্ভিস পয়েন্ট ধরে রাখল ঠিকই কিন্তু কেউই কারও সার্ভিস ব্রেক করতে পারল না। ফলাফল ৪-৪। হায় ভগবান, কাপ্রিয়াতি যদি নিজের সার্ভিস ধরে রেখে একটা ব্রেক পয়েন্ট পায় তাহলেই জিতে যাবে। এই বছর একটাও গ্রান্ড স্লাম না-হারা ট্রেফি, উইম্বলডনের রানি শেষে কিনা হেরে যাবে, আমার চোখের সামনে। না কিছুতেই আমি এটা হতে দিতে পারি না ওই নিদারুণ বিপদে আমার একমাত্র ভরসার জায়গা ভগবা্নকে ডা্কতে লাগলাম, চোখ বন্ধ করে মনে রাস্তার মোড়ের শনি মন্দিরে মানত করলাম।

কি আশ্চর্য! চোখ খুলে তাকাতে দেখি মিরাকেলেন হাতছানি। স্ট্রেফি ব্রেক পয়েন্ট পেয়ে গেছে। পরে নিজের সার্ভ ধরে রেখে দ্বিতীয় সেট স্ট্রফির পক্ষে ৬-৪, আমার স্বপ্নের রানি এইভাবে হেরে যাবে এটা কখনও হতে পারে? এই না হলে স্ট্রেফিগ্রাফ! খেলা ঘুরে গেছে, স্ট্রেফির বডি ল্যাঙ্গুয়েজই বদলে গেছে। সেই আক্রমণাতাক ফর্মে ফিরে যেন মেঘের মধ্যে দিয়ে উড়তে উড়তে শট মারছে। সে ক্ষিপ্ত গতিতে উড়ছে সঙ্গে তাল দিচ্ছে তার হর্সটেইল করা সোনালি চুল। সামঞ্জস্য রেখে তার হাতের র‍্যাকেট যেন কথা বলছে। সাদা শর্ট-স্কার্ট আর সাদা টি-সার্ট পরা স্ট্রেফির বিন্ম্র দীপ্ত ভংগীমাই জানিয়ে দিচ্ছে খেলা ঘুরে গেছে। তাকে হারায় কার সাধ্যি? শেষ সেটে ক্যাপ্রিয়াতি দাঁড়াতেই পারল না। খুব স্বল্পসময়ে কাপ্রিয়াতিকে প্রায় উড়িয়ে দিয়ে স্ট্রেট সেট জিতে ৬-০ করে আমার স্বপ্নের রাজকুমারী উইম্বলডনের চ্যাম্পিয়ন। সেন্ট্রাল কোর্টে খেলা দেখা আমার জীবনের সেরা অভিজ্ঞতা এই কথা ভেবে মনে মনে আত্মশ্লাঘা অনুভব করছি এমন সময় শুনি অনেক দূর থেকে মা ডাকছে। ধড়ফড় করে ঘুম থেকে লাফিয়ে উঠলাম। টিভি চালিয়ে ঘুমাচ্ছি বলে মা বকাবকি করে, ‘আনন্দবাজার’ পত্রিকাটি হাতে ধরিয়ে দিল। তাড়াতাড়ি পেছনের পাতা খুলতেই দেখি সোনার ঝলমলে চ্যাম্পিয়নশিপের প্লেটটা হাতে স্ট্রফির রাজকীয় কিন্তু নমনীয় স্মিত হাস্যের ছবি এবং খেলার ফলাফল ৪-৬, ৬-৪, ৬-০। কে যেন বলে গেছেন ভোরের স্বপ্ন সত্যি হয়?

এরপরে বেশ কিছুদিনের বিরতির পর আবার দারুণ ভাল একটা স্বপ্ন দেখি। বিল ক্লিন্টন প্রথ্মবার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর আমাকে ব্যক্তিগত আমন্ত্রণ জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের আতিথ্য গ্রহণ করার জন্য। বিলের সঙ্গে একদিন কাটাতে পারার আনন্দে উৎফুল্ল আমি তড়িঘড়ি গোছগাছ করে রওনা দিলাম। এক মেঘলা সকালে একরাশ মন খারাপ দিয়ে আমেরিকা পৌঁছলাম। কারণ মেঘলা দিনে আমার খুব মন কেমন করে। কোথায় আজকের দিনটা উৎসবের মেজাজে রোদ ঝলমলে থাকবে, তা না- যাই হোক কি আর করা যাবে, হোয়াইট হাউসে পৌঁছানোর সাথে সাথে ফাস্ট লেডি হিলারী ক্লিন্টন আমাকে সহাস্য সম্ভাষণ জানিয়ে ড্রইং রুমে নিয়ে বসালেন। তার হাসি আর ব্যবহারের আভিজাত্যে আমার মন খারাপ নিমেষে উধাও হয়ে গেল। একে তো ফাস্ট লেডি, অসম্ভব সুন্দরী তার উপর পৃথিবীর দশজন ল’ইয়ারের মধ্যে অন্যতম হিলারী এমন আন্তরিক ভাবে আমার সাথে গল্প করতে লাগলেন মনে হল কতদিনের পরিচিত। উনি আমাকে এতটাই সহজ করে দিলেন যে আমি অতি উৎসাহিত হয়ে হোয়াইট হাউসের ইন্টিরিয়র ডিজাইনি নিয়ে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়ে ফেললাম। কারণ আমার বাস্তবিকই মনে হল ঘরের অলংকরণে কিছু ছোটখাট পরিবর্তন দরকার- যা করলে বিলের নমনীয়, রাজকীয়, রোমান্টিক পারসনালিটির সঙ্গে আর বেশি করে খাপ খাবে। আমাকে অবাক করে দিয়ে হিলারী ও সেগুলো মেনে নিয়ে জানালেন চেলসীও নাকি অনেকদিন ধরে বলছে ঘরের সাজসজ্জাটা বেশ বোরিং এবং আমার রুচিবোধের, সংস্কৃতিবোধের খুব প্রংশসা করে অনেক ধন্যবাদ দিলেন। এইভাবে কিছু সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর আমি মনে মনে একটু অধৈর্য হয়ে উঠলাম কারণ বিলকে কোথাও দেখতে পাচ্ছি না। আমার মনের কথাটা বুঝতে পেরেই বোধহয় ল্যান্ডফোনটা বেজে উঠল। ফোন ধরতেই অন্য প্রান্তে বিলের ব্যারিটোন। অনেকবার করে ‘সরি’ বলে আমাকে জানালেন যে আমাকে আমন্ত্রণ করে তার এই সময় বাড়িতে থাকা উচিত ছিল, কিন্তু হঠাৎ এটা ইমার্জেন্সি-তে তাকে একটু প্রেসিডেন্সিতে যেতে হয়েছে, আমি যেন কিছু মনে না করি, তবে তিনি একটু পরেই চলে এসে আমার সাথে লাঞ্চ করবেন। এরপর কিছুক্ষণ হিলারীর সাথে নানা বিষয়ে কথা বলতে বলতে খুব জোরে জোরে হঠাৎ কলিং বেল বাজতে লাগল। ক্লিটন এসেছেন মনে করে খুব উৎফুল্ল হয়ে ধড়ফড় করে উঠে দরজা খুলে দেখলাম একজন অপরিচিতা এসে খবর দিচ্ছে আমার কাজের লোক আজকে আসতে পারবে না। কি করুণ ছন্দপতন, এত সুন্দর স্বপ্নের সমাপতন ঘটিয়ে, রঙিন আকাশ থেকে একেবারে বাস্তবের রূঢ় মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়া। কি আর করা যাবে দরজা বন্ধ করে আবার শুয়ে পড়লাম যদি স্বপ্নটা ফিরে আসে- এবং ক্লিন্টন সামনে দাঁড়িয়ে মিটমিট করে হেসে বলে – ‘হাই’।

এরপরে কিছুদিন বাস্তবের কাছাকাছি থাকার পর আবার মন ভাল করা স্বপ্ন। ছোটবেলা থেকে উত্তমকুমার আমার স্বপ্নের নায়ক, তার তাকানোতে আমি রোমান্টিকতা শিখেছি। তার জগৎ ভোলান হাসিতেই আমি নিজেকে আবিষ্কার করেছি। উত্তমকুমার যদি শুধু হাসিমুখে দাঁড়িয়ে থাকে সেটা দেখেই মনে হয় আমি একযুগ কাটিয়ে দিতে পারব। বারে বারে নতুন করে তার প্রতেকটা চরিত্রের প্রেমে পড়েছি আমি। আর সেই প্রেম থেকে কোনদিন বেরতে পারলাম না। আবশ্য সচেতন ভাবেই আমার ভালোলাগা থেকে বেরতে চাই না। সুস্মিতা সেন ‘মিস ইউনিভার্স’ হওয়ার পরে স্বপ্ন দেখলাম- উত্তমকুমার সুস্মিতা সেন-কে বিয়ে করতে চেয়েছে- আর সুস্মিতা সেন সানন্দে সাগ্রহে রাজি হয়ে গেছে। স্বপ্নে কত কিছু হয়- ১৯৮০ সালে উত্তমকুমার মারা যাওয়ার পরে খুব সম্ভব সুস্মিতা সেনের জন্ম হয়। স্বপ্নের মধ্যে আর বিয়েটা দেখা হয়নি। আমার মনে হয় এই জন্যই সুস্মিতা সেন এখনও বিয়ে করল না।

এরপর একদিন স্বপ্নে দেখলাম প্রিয়াঙ্কা গান্ধির বিয়ের আগে আমি আর প্রিয়াঙ্কা সারাদিন একসাথে কাটালাম, শপিং করলাম। যদি ও প্রিয়াঙ্কার মত সুন্দরীর পাশে রবার্ট –কে আমি কোন দিনই মানতে পারিনি তবুও বিয়ের আগে একদিন স্বপ্নে প্রিয়াঙ্কার সাথে ব্যাচেলার পার্টি সেলিব্রেট করলাম।

এর বেশ কিছুদিন পরে এক রাতে দেখলাম অনিল আম্বানী এবং টীনা আম্বানী আমাদের বাড়িতে এসেছে ডিনার করার জন্য। সেদিন কি কারণে যেন আমার মুড অফ ছিল। তাই মেজাজ তিরিক্ষি হয়ে ছিল। আমার হাজবেন্ড আড়ালে আমাকে বোঝানোর চেষ্টা করল যে কাউকে বাড়িতে ইনভাইট করে একদম মুড অফ করে থাকতে নেই সেটা খুবই অশোভন তাহলে অতিথি অসম্মানিত বোধ করতে পারে আমার মন খারা্পটা কিছুতেই প্রকাশ করা উচিত নয় তো আমি ওর কথা শুনে নিজেকে পালটে হাসি খুশি থাকার চেষ্টা করলাম এবং সেই সন্ধ্যেটা চারজনে খুব ভালো এনজয় করলাম।

আর একদিন দেখলাম স্বপ্নের মধ্যে সুচিত্রা সেন আমাকে শেখাচ্ছেন, কিভাবে তাকালে, হাসলে, ওর মত প্লেজেন্ট পারলনালিটির অধিকারী হওয়া যায়।

_ স্বপ্ন আমি প্রায় রোজই দেখি তবে ব্যক্তিগত স্বপ্নগুলো বলা যাবে না। আর এগুলোর মধ্যেও ছোটবেলার প্রশ্নপত্রের মত ইম্পট্যান্ট, ভেরী ইম্পট্যন্ট এবং লেস ইম্পট্যান্ট এর ভাগ আছে। ইতিমধ্যেই আপনারা বোরড হয়ে হাই তুলছেন দেখতে পারছি। আর দু-একটা যদি বলি তবে জেলুসিল খেতে হতে পারে।

আচ্ছা শুনেছি, কে কেমন স্বপ্ন দেখে তাই দিয়ে নাকি তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বোঝা যায়। আমারটা কিছু বোঝা যাচ্ছে কি?

কল্প-বিলাসী…?

এক – এক ঠিক হল না – এটা স্বপ্ন-বিলাসী বললে ফ্লেভারটা ঠিক মত আসবে। তবে বেশি ভেবে কাজ নেই। তারচেয়ে সুন্দর সুন্দর স্বপ্ন দেখুন। দেখবেন আপনার মন কেমন সতেজ থাকবে – চিরসবুজ থাকবে।

স্বপ্ন দেখা সৌন্দর্যের পক্ষে ভাল…।

স্বপ্ন- স্বপ্ন- স্বপ্ন

স্বপ্ন দেখে মন।

Facebook Comments